কথায় আছে মঙ্গলে ঊষা, বুধে পা। যেথায় খুশি, সেথায় যা। সেই বুধেই তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫ মে সকাল ১০টা বেজে ৪৫ মিনিটে রাজভবনে শপথ নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইট করে জানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
সোমবার রাজ্যপাল ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দেন মমতা। রাজ্যে নতুন সরকার গঠনের আগের প্রথা মেনেই এই পদত্যাগ করেন তিনি। যতদিন না পর্যন্ত নির্বাচিত সরকার শপথ নিচ্ছে, ততদিন তাঁকে কাজ চালিয়ে যেতে অনুরোধ করেন রাজ্যপাল।
এদিকে, ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকে রাজ্যে যে তদারকি সরকার চলছিল, তার মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে এদিন ইস্তফা দিয়েছেন মমতা। রাজ্যপাল ধনখড় সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণও করেন। পরে টুইট করে রাজ্যপাল জানান, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তা গৃহীতও হয়েছে। তবে পরবর্তী সরকার গঠন হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁকেই দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
ওই টুইটের সঙ্গে রাজভবনে মমতা এবং ধনখড়ের একটি ভিডিয়োও শেয়ার করেন রাজ্যপাল। তাতে বেশ হালকা মেজাজেই কথা বলতে দেখা যায় দু’জনকে। এর কিছুক্ষণ পরেই টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতার শপথ নেওয়ার দিনক্ষণের ঘোষণা রাজ্যপাল।
মমতা সোমবার দুপুরেই জানিয়েছিলেন রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তার জন্য সময়ও চেয়েছেন রাজ্যপালের কাছে। ৭টা নাগাদ দেখা করতে চান বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যপালকে। সন্ধ্যায় ঠিক ৬টা বেজে ৪৫ মিনিটে মমতা পৌঁছে যান রাজভবনে। রাজ্যপালের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে তাঁর।
নির্বাচনে জয়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবেই রাজ্যপালের সঙ্গে এই সাক্ষাৎ মমতার। এই বৈঠকে ভোটে জয়ী বিধায়কদের তালিকাও রাজ্যপালকে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রীর। নতুন মন্ত্রিসভা এবং সরকার গঠনের জন্য আবেদনও জানানোর পরেই সেই আবেদন গ্রহণ করেন বাংলার সাংবিধানিক প্রধান।
এদিকে, সোমবার কালীঘাটের তৃণমূল ভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো অ-বিজেপি ফ্রন্ট গঠনের ইঙ্গিত দেন। এদিন তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের একাধিক বিজেপি বিরোধী দলের নেতা এবং মুখ্যমন্ত্রীরা তাঁকে ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন।‘ কারা রয়েছেন সেই তালিকায়? মমতা বলেন, ‘আমাকে উদ্ধবজি ফোন করেছিলেন উনি খুব খুশি। রজনিকান্ত ফোন করেছিলেন। অরবিন্দের সঙ্গে আমরা দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে। হুডাজি (হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী) এবং অমরিন্দর সিংজি-ও আমাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন।‘ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জাতীয় রাজনীতিতে অঘোষিত বিজেপি ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক তাঁকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছে। কালীঘাটে এই দাবিও এদিন করেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করব সেই ব্যাপারে কথা হয়েছে। এদিন এই ইঙ্গিত দিলেন মমতা। তাহলে ২০২৪-এর সাধারণ নির্বাচনে কি বিজেপি বিশেষ করে মোদী-বিরোধী ফ্রন্টের নেতৃত্বে তৃণমূল সুপ্রিমো? রবিবার বঙ্গ ভোটের ফল স্পষ্ট হতেই এই প্রশ্ন ঘুরেফিরে তুলছেন পর্যবেক্ষকরা।