নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে পুরোনো এক তথ্যচিত্র প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির কার্যালয়ে হানা দিয়েছিলেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। তার প্রেক্ষিতে এবার মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে তৃণমূল বহুদিন আগে থেকেই অভিযোগ করছে, বিরোধী কণ্ঠস্বর দমন করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে কাজে লাগাচ্ছে মোদী সরকার। গণতান্ত্রিক দেশে সংবাদমাধ্যমের দায়িত্ব বিরোধী কণ্ঠস্বর তুলে ধরা।
সেকথা মাথায় রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশঙ্কা মোদী সরকার দীর্ঘদিন কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকলে, 'একদিন ভারতে কোনও সংবাদমাধ্যম আর থাকবে না।' তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে সংবাদমাধ্যমকে ভীতি প্রদর্শন করছে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার এই প্রসঙ্গে মমতা ব্যানার্জি বলেন, 'বিবিসির কার্যালয়ে আইটির হানা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ধাক্কা খেয়েছে। একদিন ভারতে আর কোনও সংবাদমাধ্যম থাকবে না।'
মঙ্গলবারই দিল্লি এবং মুম্বইয়ে বিবিসির কার্যালয়ে একযোগে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা হানা দিয়েছেন। আধিকারিকদের অভিযোগ, বিবিসি আয়কর আইন ভঙ্গ করেছে। সম্প্রতি, ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার ওপর বিবিসি একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে। তথ্যচিত্রটি প্রকাশ পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকার সক্রিয় হয়ে ওঠে। ইউটিউব এবং টুইটার থেকে তথ্যচিত্রটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। এই ঘটনার জেরে কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নেয় কংগ্রেস। তারা অভিযোগ করে, মোদী সরকার সমালোচনাকে ভয় পাচ্ছে। তার জেরেই সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলোকে তথ্যচিত্রটি সরিয়ে ফেলার জন্য চাপ দিয়েছে।
আরও পড়ুন- ডেপুটি স্পিকার নেই, কেন সরকারের কাছে এনিয়ে জবাবদিহি চাইল আদালত?
এবার বিবিসির দফতরে আয়কর হানারও তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। দলের তরফে এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল প্রতিক্রিয়ায় বলেন, 'বিবিসির অফিসে আইটি অভিযান হতাশার জন্ম দিয়েছে। এটা দেখাচ্ছে যে মোদী সরকার সমালোচনাকে ভয় পায়। আমরা এই ভয়ভীতি দেখানোর কৌশলের কঠোর ভাষায় নিন্দা করছি। এমন অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী মনোভাব আর চলতে পারে না।'
কংগ্রেসের পাশাপাশি, সিপিএম এবং বহুজন সমাজ পার্টিও কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র নিন্দা করেছে। বিএসপি সাংসদ কুনওয়ার দানিশ আলি প্রতিক্রিয়ায় বলেন, 'আইটি, ইডি এবং সিবিআই আদানির অফিসে পৌঁছয়নি। তবে আইটি বিভাগের একটি দল বিবিসির দিল্লি অফিসে অনুসন্ধান চালিয়েছে। এটি ভারতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার যা কিছু অবশিষ্ট আছে, তার ওপর আক্রমণ। বিশ্ব সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় ভারতের স্থান ১৫০তম। এটা স্পষ্ট যে, ভারত এখন আরও পিছলে যাবে।'
Read full story in English