দুর্নীতি ইস্যুতে বিরোধীদের নিশানায় তৃণমূল। এবার পুরপরিষেবা থেকে পাকাপাকিভাবে দুর্নীতি মুছতে উদ্যোগী খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশ, 'আগামীতে পুরপরিষেবার জন্য আনলাইনে আবেদন করতে হবে, সাতদিনেই সুরাহা মিলবে।' পাশাপাশি তৃণমূল সুপ্রিমোর সাফ কথা, কাজই হবে কাউন্সিলরদের বিচারের একমাত্র মানদণ্ড। কাজ করতেই হবে, না হলে সরে যেতে হবে জনপ্রতিনিধি পদ থেকে। কলকাতার পুরপ্রচারে সাফ জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী বলেছেন মমতা?
গত পাঁচ বছরের বেশি সময় কলকাতার পুরবোর্ড তৃণমূলের দখলে। প্রভূত উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু পুরপরিষেবা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি অনভিপ্রেত ঘটনাও তাঁর কানে এসেছে। যা খতিয়ে দেখেই সুরহার বন্দোবস্ত করেছেন বলে বেলেঘাটায় প্রচার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরপরই মহুয়া মৈত্রকে ভর্ৎসনার প্রসঙ্গে নেত্রীর ব্যাখা, 'আমি কিছু বললেই সংবাদ মাধ্যম বলেন আমি একে-বকেছি, ওকে বকেছি। আমি বকার জন্য বলি না। ভালোর জন্য সংশোধনের জন্য বলি।'
মমতার সংযোজন, 'কাউন্সিলরের যা কাজ তা করতে হবে। এলাকার মানুষ জস, আলো সহ পুরপরিষেবা পাচ্ছেন কিনা সেটা কাউন্সিলরকেই দেখতে হবে। যিনি পারবেন না, তিনি সরে যাবেন।' এই প্রসঙ্গেই উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ওয়ার্ডে পুরপরিষেবার প্রসঙ্গ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমি একদিন যাচ্ছি, কয়েক জন গাড়ি আটকে বললো পাইপে জল নেই। আমি কাউন্সিলরকে জানালান, জিজ্ঞাসা করলাম কেন হয়নি। তাই এবার আর টিকিট দিনি।'
অর্থাৎ কাজ না করলে পরের ভোটে আর টিকিট মিলবে না বলে আগেই সতর্ক করে দিলেন শাসক দলের নেত্রী।
কলকাতাতেই সিন্ডিকেটরাজ রয়েছে। মুখে না বললেও অনিয়ম রুখতে পুরপরিষেবার আবেদনও এ দিন অনলাইন পদ্ধতি চালুর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কড়া বার্তা, 'এলাকায় কে ঘর করবে তা দেখার কাজ কাউন্সিলরদের নয়। বাড়ি তৈরির সামগ্রী নির্দিষ্ট কারোর থেকেই কিনতে হবে, তা চলবে না।' পাশাপাশি তাঁর নির্দেশ, 'এখন বাড়ি তৈরির অনুমতি মিলছে অনলাইনে। আগামীতে পুরপরিষেবা না পেলেও অনলাইনে জানাতে হবে। সাতদিনেই মিলবে সুরাহা।' শিল্প গড়তেও প্রয়োজনীয় অনুমতির বিষয়টি অনলাইনে করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র বলেছেন, 'এর আগেও কাটমানি নিতে নিষেধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজের কাজ কিছু হনি। ভোট এলেই ওনার এসব মনে পড়ে। এবারও সমস্যা মিটবে না।'
কলকাতায় এবার বর্ষায় জল জমার সংস্যা প্রকট হয়েছে। সংস্যা সমাধানে তিলোত্তমায় আরও ২০০টি পাম্প বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গরিব বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করে বড় অট্টালিকা বা আবাসন নির্মাণ করা রুখতে হবে। এক্ষেত্রে পুরসভার আইন মোতাবেক দেখভালের কাজ করেবন কাউন্সিলররা। নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রীর।
আগামীতে কমিউনিটি হলের বুকিংও অনলাইনে করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, 'আমরা কোনও কাজ ফেলে রাখি না। দুঃস্বপ্নের নয়, কলকাতা এখন স্বপ্নের শহর। যে বাইরে থেকে আসে সেই দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে যায় শহরকে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন