ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলি আহমেদের বংশধররা স্থান পাননি সদ্য প্রকাশিত এবং বহু প্রতীক্ষিত আসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস বা NRC) তালিকায়। এই তথ্য আজ দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় ক্যাথলিক বিশপ কনফারেন্সে তুলে ধরেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, "প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলি আহমেদের পরিবারের সদস্যরাও নেই এই তালিকায়! আমার আর কিছু বলার নেই। অবশ্য অনেকেরই তো নাম নেই।"
কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের কড়া ভাষায় সমালোচনা করে মমতা বলেন, বিজেপি দেশে 'ডিভাইড অ্যান্ড রুল' বা বিভাজনের রাজনীতি চালু করে দিয়েছে। তাঁর কথায়, "ওরা মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। দেশে গৃহযুদ্ধ লাগবে, রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে। গতকাল যে ৪০ লক্ষ মানুষ শাসকদলকে ভোট দিয়ে জেতালেন, আজ তাঁদেরকেই নিজেদের দেশে উদ্বাস্তু করে দেওয়া হয়েছে।"
গতকাল আসামের NRC-র চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই সরকার এবং বিরোধী দলগুলির মধ্যে তীব্র মতভেদ দেখা দিয়েছে। যে ৩.২৯ কোটি বাসিন্দা নাগরিকত্বের দাবি জানিয়ে আবেদন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ২.৮৯ কোটির স্থান হয়েছে তালিকায়। আসাম জুড়ে অনিশ্চয়তার যে ঢেউ বইছে, তা কিছুটা প্রশমিত করতেই সরকার ঘোষণা করেছে যে কোনো বাসিন্দাই ফরেনারস ট্রাইব্যুনাল বা ডিটেনশন ক্যাম্পে যাচ্ছেন না।
;
তাঁর ভাষণে ভারতের ঐক্য এবং বহুত্বের ওপর জোর দেন মমতা, বলেন, "ভারতে চাই বদল, এবং সেই বদল ২০১৯-এ আসা খুব জরুরি। ঝাড়খণ্ডে যা হয়েছে তা হয়ত বিহার বা উত্তরাখণ্ডে আবার হতে পারে, কিন্তু বাংলায় হবে না, কারণ সেখানে আমরা রয়েছি, অন্ধ্র প্রদেশে হবে না কারণ চন্দ্রবাবু নাইডু রয়েছেন, কর্নাটকে হবে না কারণ কুমারস্বামী রয়েছেন।
আরও পড়ুন: এন আর সি তালিকায় নামহীনদের ওপর জোর জুলুম নয়: শীর্ষ আদালত
কেন্দ্রের রাজনীতির আর এক দফা সমালোচনা করে তিনি বলেন, "আজ যদি বাঙালিরা বলেন বিহারীরা বাংলায় থাকতে পারবেন না, দক্ষিণ ভারতীয়রা বলেন উত্তর ভারতীয়রা দক্ষিণে থাকতে পারবেন না, উত্তর ভারতীয়রা বলেন দক্ষিণ ভারতীয়রা উত্তরে থাকতে পারবেন না, তবে দেশের কী হাল হবে?"
ইতিমধ্যে, আজ সুপ্রিম কোর্ট এক বক্তব্যে জানিয়েছে, নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া যেহেতু কেবল খসড়াই, তার ভিত্তিতে কোনরকম দমনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া চলবে না।