শুধু নন্দীগ্রাম থেকেই লড়তে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই দাবিতে একের পর এক টুইট করে শাসক দলের উপর সমষ্টিগত চাপ বৃদ্ধির 'খেলা'য় নামলেন গেরুয়া দলের নেতারা। মুকুল রায় থেকে দিলীপ ঘোষ, অমিত মালব্য থেকে কৈলাস বিজয়বর্গীয়- মমতাকে উদ্দেশ্য করে একই চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন তাঁরা। একই দাবিতে সরব শুভেন্দু অধিকারী, বাবুল সুপ্রিয়, দেবশ্রী চৌধুরী, অর্জুন সিংরা।
টুইটের ভাষা ভিন্ন, কিন্তু বক্তব্য একটাই। সেখানে উল্লেখ, 'নন্দীগ্রাম থেকে নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু উনি একথা বলেননি যে শুধু নন্দীগ্রাম থেকেই লড়বেন। নিজের জয় সম্পর্কে নিশ্চিৎ হলে উনি ঘোষণা করুন যে শুধু নন্দীগ্রাম থেকেই লড়বেন। নাহলে ধরে নিতে হবে নন্দীগ্রামের ওপর ওনার ভরসা নেই। তাই অন্য কোনও আসন থেকেও উনি প্রার্থী হতে পারেন।'
নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলন থেকেই তৃণমূলের রাজনৈতিক উত্থানের শুরু। পরে ২০১৬ সলে ওই আসন থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে দাঁড় করান তিনি। হেলায় জয় পান নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম মুখ শুভেন্দু। কিন্তু সম্প্রতি মন্ত্রিত্ব ও তৃণমূল ছেড়েছেন তিনি। ইস্তফা দিয়েছেন বিধায়ক পদ থেকে। যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। এরপর থেকেই একের পর এক আক্রমণ শানাচ্ছেন নেত্রীকে উদ্দেশ্য করে। ফলে নন্দীগ্রাম এখন প্রেসটিজ ফাইটের কেন্দ্র।
এই পরিস্থিতিতে তেখালির সভা থেকে তৃণমূল নেত্রী নিজেই ঘোষণা করেন যে তিনি এবার নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হবেন। একই সঙ্গে জানিয়েছিলেন ভবানীপুরেও লড়তে পারেন তিনি। সেদিনই বিকেলে দক্ষিণ কলকাতার সভা থেকে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল নেত্রীকে প্রথম চ্যালেঞ্জ ছোড়েন। বলেন, 'দু'টি আসন নয়৷ শুধু নন্দীগ্রাম থেকেই ভোটে লড়তে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ ওই আসন থেকে দল আমাকে দাঁড় করাক বা অন্য কাউকে, হাফ লাখ ভোটে হারাব।'
মমতাকে উদ্দেশ্য করে সেদিন শুধু শুভেন্দুই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন, এবার গেরুয়া শিবিরের নতুন কৌশল, ভোটের আগে চাপ বাড়াতে তাই সম্মিলিত আক্রমণের পথে হাঁটলেন বিজেপির কেন্দ্র ও রাজ্যে নেতৃত্ব।
তৃণমূল নেত্রীকে নিশানা করে টুইটে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি লিখেছেন, 'বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হবেন বলে নিজেই ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কেন্দ্র থেকে তিনি জিতবেন, এমনটা সুনিশ্চিত হলে তবেই ঘোষণা করুন যে, ওই কেন্দ্র থেকেই তিনি লড়বেন। পরে যেন মুখ্যমন্ত্রী কথার খেলাপ না করেন। নাহলে তিনি কী করবেন, তা জানা আছে।’
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা ও এরাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৈলাস বিজয়বর্গীয় লিখেছেন, ‘মমতাদি ঘোষণা করেছেন নন্দীগ্রাম থেকে তিনি বিধানসভা নির্বাচনে লড়বেন। কিন্তু উনি একথা বলেননি যে শুধু নন্দীগ্রাম থেকেই লড়বেন। নিজের জয়ের ব্যাপারে প্রত্যয়ী হলে উনি সেই ঘোষণাটাও করে দিন। নইলে ধরে নেব নন্দীগ্রামের ওপর ওনার ভরসা নেই।’
একই কথা লিখেছেন শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষ, বাবুল সুপ্রিয়রা।
পদ্ম বাহিনীর চ্যালেঞ্জ কী গ্রহণ করবেন মমতা? জবাবের অপেক্ষায় বঙ্গবাসী। তবে, জমি আন্দোলনের ১৪-১৫ বছর পর এবার নির্বাচনের জন্য ফের একবার আলোচনার কেন্দ্রে নন্দীগ্রাম।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন