লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় গেরুয়া হাওয়া ঝড়ের ইঙ্গিত দিতেই ত্রস্ত ঘাস্ফুল শিবির। ইতিমধ্যেই ' জয় শ্রীরাম' ধ্বনি হয়ে উঠেছে অন্যতম বিতর্কিত স্লোগান। ৩০ মে নৈহাটিতে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি লক্ষ্য করে জয় শ্রী রাম স্লোগান দেন কয়েকজন। এরপর গাড়ি থেকে নেমে আসেন ক্ষুব্ধ মমতা। এরপর সেদিনই নৈহাটির মঞ্চ থেকে আরএসএস-এর পাল্টা 'জয় হিন্দ বাহিনী' গড়ে তোলার ডাক দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আজ রবিবার দলনেত্রীর নির্দেশ মেনে সেই জয়হিন্দ বাহিনীর যাত্রা শুরু করে তৃণমূল নেতৃত্ব। মমতার নির্দেশ মেনে একইসঙ্গে মহিলাদের জন্য তৈরি হচ্ছে 'বঙ্গজননী বাহিনী'। তবে মমতা যতই এই দুই বাহিনীর মাধ্যমে আরএসএসের পালটা সংগঠন গড়ে তুলতে চান, নাগপুরের সংগঠনটি কিন্তু মমতার এই পদক্ষেপকে মোটেও গুরুত্ব দিচ্ছে না। বরং আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ মনে করছে এই বাহিনী শেষমেষ সিন্ডিকেট রক্ষী বাহিনীতে পরিণত হবে। তাদের অভিমত, একটা ভাল সংগঠন করতে গেলে যেসব নিবেদিত প্রাণ কর্মী এবং সাধনার প্রয়োজন হয় তা তৃণমূল কংগ্রেসের নেই।
আরও পড়ুন ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের ইফতারে অতিথিদের হেনস্থা, অভিযুক্ত পাক আধিকারিকরা
আরএসএসের রাজ্য সম্পাদক জিষ্ণু বসু বলেন, তৃণমূল যে বাহিনীই তৈরি করুক না কেন কয়েক মাস পরে তা সিন্ডিকেট রক্ষী বাহিনী হয়ে যাবে। পয়সা নেওয়া ছাড়া ওই বাহিনীর কোনো কাজ থাকবে না"। অপরদিকে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্বাঞ্চলীয় সংগঠন সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিনহার দাবি, তৃণমূলের এই বাহিনী শেষমেশ 'ঠ্যাঙারে' বাহিনীতে ্পর্যবসিত হবে। তিনি আরও বলেন, "কংগ্রেসও একসময় সেবা দল গঠন করেছিল। কিন্তু কোথায় গেল সেই সেবা দল? নিয়ম নিষ্ঠা না থাকলে কোন সংগঠন বড় হতে পারে না। হাজার হাজার কার্যকর্তার বহু বছরের সাধনায় সংগঠন তৈরি হয়। সেসব তৃণমূলে কিছুই নেই।"
উল্লেখ্য, সারা দেশ জুড়ে সংঘ পরিবারের একাধিক শাখা সংগঠন রয়েছে। বিজেপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিস্তারে এই সব সংগঠনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তৃণমূল কংগ্রেস এর আগেও জয় হিন্দ বাহিনী গঠন করেছিল। রাজনৈতিক মহলের মতে, কার্যক্ষেত্রে এটা একটা 'নাম-কা-ওয়াস্তে' বাহিনী ছাড়া আর কিছুই নয়, এদের কোন কার্যকলাপ কখনও কারও নজরে পড়েনি। রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে শীর্ষপদে বসিয়ে এবং নানা পদক্ষেপ নিয়েও এই সংগঠন নিজের পায়ে দাঁড় করানো যায়নি।
আরও পড়ুন কালীঘাটে মমতা-কুণাল একান্ত সাক্ষাৎ, রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা
তবে অতীতে অসফল হলেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আবহে রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের বাড়বাড়ন্ত দেখে তৃণমূল সুপ্রিমো নতুন করে জয় হিন্দ বাহিনী গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে এই বাহিনী গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সংঘ পরিবার বা বিশ্ব পরিষদ মনে করছেন তাদের বাহিনীর সঙ্গে টক্কর দিতে পারবে না তৃণমূল কংগ্রেসের জয় হিন্দ বাহিনী। তবে শেষ পর্যন্ত গেরুয়া শিবিরের পথে হেঁটেই মমতা গেরুয়া শিবিরকে রুখতে পারবেন না কি ফের পর্যুদস্ত তা বলবে আগামী।