লোকসভার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর বিধানসভায় গেরুয়া ঝড় থামাতে তৎপর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই কর্মী সমর্থকদের সংগঠিত হওয়ার ডাক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মধ্যমগ্রামে প্রশাসনিক বৈঠক করার পর সোমবার ফের নজরুল মঞ্চে বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের একদম নীচু তলার কর্মীরা কী কী করবেন আর কী কী করবেন না সে ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তা মমতা সোমবার দিতে পারেন। এছাড়াও কিছু নতুন উদ্যোগ এবং বেশ কিছু সাংগঠনিক রদবদলও ঘটাতে পারেন দলনেত্রী, এমনটাই জানা যাচ্ছে। তবে ২১ জুলাই শহিদ সমাবেশেই দীর্ঘমেয়াদী বেশ কিছু উদ্যোগ এবং কর্মসূচির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের অন্দরে খবর যে এমন কিছু কর্মসূচিও সোমবারের বৈঠকে ঘোষণা করতে পারেন নেত্রী।
আরও পড়ুন: মমতার তোষণনীতিতেই বাংলার ক্ষতি: কেশরী নাথ ত্রিপাঠী
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে বাংলায় বিজেপির ১৮টি আসন দখলের পরেই তৃণমূল দল ছেড়ে পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নেয় ঘাসফুল শিবিরের বেশ কিছু কর্মী সমর্থকেরা। এহেন টালমাটাল পরিস্থিতিতে এবার দলের রাশ শক্ত করতে ফের তৎপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় বিজেপির শক্তি কমাতে এবং সংগঠনকে আরো দৃঢ় করতে ইতিমধ্যেই একাধিক সভাও করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি এর মধ্যেও তাঁর 'কাটমানি ফেরত'-এর নির্দেশের পর এই ইস্যু নিয়েও তোলপাড় হয়েছে রাজ্য-রাজনীতি। কাটমানি ইস্যু নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখেও পড়তে হয়েছে তৃণমূলকে। মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ এবং তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান নেতা বলেন, "আমরা মুখিয়ে আছি কালকের বৈঠকের জন্য। একুশের সভা থেকে উনি একটা পথের হদিশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার বিজেপিকে রুখতে কিছু দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপও নেওয়া হতে পারে এবং বিশেষ কিছু কর্মসূচীর দিকেও আলোকপাত করা হতে পারে। এমনকি দলের অন্দরেও কিছু রদবদল করে সাংগঠনিক শক্তিও মজবুত করা হতে পারে।"
আরও পড়ুন: মোদীকে চিঠির জের, দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের অপর্ণা,অনুরাগদের বিরুদ্ধে
তৃণমূল শিবিরেরই আর এক নেতা বলেন, "রাজ্য পর্যায়ের বৈঠকের সময় নেত্রী আমাদের আগেই বলেছিলেন যে দলে বিভিন্ন পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে কারণ লোকসভা ভোট এবং বিধানসভা ভোটের পার্থক্য রয়েছে। জনসংযোগ বাড়াতে তিনি বিধায়ক এবং জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেন"। তবে তৃণমূল সূত্র মারফৎ খবর, এবার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের একেবারে বুথ পর্যায়ের উপরও আলাদা করে নজর রেখেছেন। বাংলায় প্রায় সাতাত্তর হাজার বুথ রয়েছে তৃণমূলের। সেখানে বিশেষ বুথ কমিটি গঠন করে সারা বছর কাজ করার নির্দেশও দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। দলের অন্দরের খবর, প্রশাসনিক ক্ষেত্রে যতটা কঠোর হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী এবার দলের অন্দরে চাপ বৃদ্ধি করতে ততটাই তৎপর হবেন দলনেত্রী। তৃণমূলের এক বিধায়ক বলেন, "আমাদের নেত্রীর কড়া বার্তা রয়েছে যে তাঁর নির্দেশ মেনে না চললে কাউকেই বরদাস্ত করবে না দল। আমরা আশা করছি যে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যব্যাপী আন্দোলনের পাশাপাশি বুথ-পর্যায়ের দলীয় সংগঠনের উপর জোর দেওয়ার কথাও ঘোষণা করবেন"।
তবে গেরুয়া ঝড়, কাটমানি ইস্যুতে বিদ্ধ তৃণমূল কংগ্রেসকে চাঙ্গা করতে এবার কী দাওয়াই দেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিকেই তাকিয়ে বঙ্গ রাজনীতি।
Read the full story in English