আবারও কলকাতায় রবিনসন স্ট্রিটকাণ্ডের ছায়া! মৃত মায়ের সঙ্গে ৩ বছর কাটালেন ৪৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। রবিনসন স্ট্রিটের ঘটনারই ছাপ পড়েছে বেহালার জেমস লং সরণিতে। মৃত্যুর পর মায়ের দেহ ৩ বছর ফ্রিজে রাখেন ছেলে। যে ঘটনা সামনে আসতেই উসকে দিয়েছে রবিনসন স্ট্রিটের ঘটনার স্মৃতি। এদিন জেমস লং সরণিতে ফ্রিজ থেকে বীণা মজুমদারের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটক করে মৃতের ছেলে সুব্রত মজুমদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
২০১৫ সাল থেকে বীণাদেবীর মৃতদেহ ফ্রিজে রাখা ছিল বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন বেহালার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার নীলাঞ্জন বিশ্বাস। ঠিক কী কারণে মায়ের মৃত শরীর ফ্রিজে পুরে রাখলেন ছেলে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও এদিন জানান তিনি। ৮৭ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ। মৃত বীণা মজুমদার একজন সরকারি কর্মী ছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া থেকে অবসর নিয়েছিলেন বীণাদেবী। মৃতের ছেলে সুব্রত মজুমদার লেদার টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন বলেও জানা গেছে। এমনকি, চামড়ার ব্যবসার সঙ্গে সুব্রত যুক্ত ছিলেন বলেও খবর। মৃতের স্বামীও সরকারি চাকুরিজীবী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে বীণাদেবীর ছেলে সুব্রত মানসিক ভাবে সুস্থই বলে মনে করা হচ্ছে। সম্ভবত মায়ের পেনশনের টাকা আসা যাতে বন্ধ না হয়ে যায়, সেজন্যই মৃত্যুর পর মায়ের দেহ সুব্রত ফ্রিজে রেখেছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে এখনও কোনও প্রমাণ পায়নি পুলিশ। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে যে, মৃত্যুর পর মায়ের দেহ বাড়িতে আনেন সুব্রত। পিস হাভেনে মায়ের দেহ রাখা রয়েছে বলে প্রতিবেশীদের জানান তিনি। ফ্রিজে মৃতদেহ ঠিক রাখতে সুব্রত রাসায়নিকও ব্যবহার করেছেন বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সূত্র মারফৎ খবর পেয়ে পুলিশ বীণা মজুমদারের দেহ উদ্ধার করেছে।
২০১৫ সালে কঙ্কালকাণ্ডে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল কলকাতায়। দিদি ও দুই কুকুরের কঙ্কাল উদ্ধার হয় থিয়েটার রোড এলাকায়। মৃতদেহগুলির সঙ্গে দিনযাপন করেছিলেন ৪৬ বছর বয়সী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়র পার্থ দে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় পার্থর বাবার। তখনই গোটা ঘটনা সামনে আসে। পার্থ দে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলেই এরকম ঘটনা ঘটেছিল বলে জানা গেছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য পরে পার্থকে একটি হোমেও রাখা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এক আত্মীয়ের বাড়িতে পার্থর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়।