আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সহ বিশিষ্ট অতিথিরা অংশ নেবেন। ওই দিনই রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা। রাম মন্দির উদ্বোধনের প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। এদিকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাম মন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে মেগা ইভেন্টে পরিণত করতে কোন খামতি রাখতে চাইছে না বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। খোদ প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন দেশ জুড়ে দীপাবলির ন্যায় পরিবেশ তৈরি করতে ১৪০ কোটি ভারতীয়কে অনুরোধ জানিয়েছেন।বেনারসে, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ রাম মন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে বাড়ি বাড়ি যোগাযোগ অভিযান শুরু করেছে। ২২ শে জানুয়ারি রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা উপলক্ষ্যে পুরোহিত, পণ্ডিত, ঋষি এবং সাধু সহ বিপুল সংখ্যক মানুষ বেনারস থেকে অযোধ্যায় পৌঁছাবেন।
কাশীর আরএসএস প্রচারক রমেশ বলেছেন 'ভগবান শ্রী রাম ভারতের পরিচয়ের প্রতীক। তাঁর জীবন ভারতীয় সমাজকে ত্যাগ স্বীকারে অনুপ্রাণিত করে। পাশাপাশি মাতৃভূমির প্রতি গভীর বিশ্বাসও প্রদর্শন করে। ভগবান শ্রী রাম হিন্দু দর্শনের মূর্ত প্রতীক'। রাম মন্দির উদ্বোধনকে ঘিরে যোগাযোগ অভিযান চলাকালীন, আরএসএস কর্মীরা প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছাবেন এবং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মানুষকে আমন্ত্রণ জানাবেন। রাম জন্মভূমি আন্দোলনের পাশাপাশি, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর কর্মসূচি এবং উৎসর্গ তহবিল কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
ইভেন্টটিকে সংঘ পরিবারের দ্বিতীয় "রাম মন্দির আন্দোলন" হিসাবে দেখা হচ্ছে। সমগ্র হিন্দু সমাজকে জাত বর্ণের সীমারেখার গণ্ডি পেরিয়ে একত্রিত করার সুযোগের ব্যবহার করতে চাইছে সংঘ পরিবার। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) সভাপতি অলোক কুমার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, “দেশের প্রতিটি জেলা থেকে ১৫০-এর বেশি সম্প্রদায় প্রতিনিধিত্ব করবে। তালিকায় দলিত ও উপজাতি সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক সাধুকে অন্তর্ভুক্ত করা রয়েছে। তাদের ছাড়াও, সবচেয়ে দরিদ্র পরিবারের ১০ জন যারা কুঁড়ে ঘরে থেকেও রাম মন্দির নির্মানের জন্য ১০০ টাকা অবদান রেখেছেন তারা ছাড়াও মন্দির নির্মাণকারী শ্রমিকরাও অতিথিদের তালিকায় রয়েছেন। অনুষ্ঠানটি সমগ্র দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চলেছে" ।
অতিথি তালিকা দীর্ঘ, যার মধ্যে রয়েছেন ৪হাজার সাধু এবং প্রায় ২,৫০০ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। হিন্দু সমাজের সমস্ত অংশ, বিশেষ করে প্রান্তিক শ্রেণির উপস্থিতি নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
ভিএইচপি মুখপাত্র বিনোদ বানসাল বলেন, মন্দির আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হিন্দু সমাজকে একত্রিত করা। “সাধুদের তালিকাও খুব চিন্তা ভাবনা করে তৈরি করা হয়েছিল। “যদিও আমরা বর্ণের ভিত্তিতে সাধুদের বিভক্ত করি না, তবে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে প্রতিটি সম্প্রদায়, অঞ্চলের সাধুরা যাতে মন্দির উদ্বোধনের দিন অংশ নিতে পারেন কারণ আমরা অনুষ্ঠানের সর্বজনীনতার কথা বলি। পাশাপাশি রাজনীতিবিদ, শিল্পী, কবি, ক্রীড়াবিদ সকল ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বনসাল আরও বলেন, 'সমস্ত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হচ্ছে কারণ রাম মন্দির আন্দোলনের সময় সমস্ত সম্প্রদায় ত্যাগ স্বীকার করেছিল। ভিএইচপি মুখপাত্র বলেছেন যে মহামারী চলাকালীন অর্থনৈতিক বিপর্যয় সত্ত্বেও, যখন মন্দির নির্মাণের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা হচ্ছিল তখন বিভিন্ন বর্ণের লোকেরা অবদান রেখেছিলেন'।