রবিবার দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এবং আম আদমি পার্টির আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল তার গ্রেফতারের প্রতিবাদ করে বলেছেন, 'তিনি নির্দোষ'।
দিল্লি সরকারের অর্থ দফতরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মণীশ সিসোদিয়া। আগামী মাসে বিধানসভায় বাজেট পেশ হওয়ার কথা। তার আগেই গ্রেফতার দিল্লি সরকারের এই হেভিওয়েট মন্ত্রী। মনীশ সিসোদিয়ার গ্রেফতার শুধুমাত্র দিল্লি সরকারের জন্যই শুধু নয়। আম আদমি পার্টি এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কাছেও এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল টুইট করে বলেছেন, “মণীশ নির্দোষ। নোংরা রাজনীতির শিকার তিনি । মণীশকে গ্রেফতার করায় দিল্লির মানুষ ক্ষুব্ধ। মানুষ সব বুঝতে পারছে। জনগণ এর জবাব দেবে। মনীশের গ্রেফতারি আমাদের মনোবল আরও বাড়বে। আমাদের সংগ্রাম আরও জোরদার হবে।”
গ্রেফতারের আগে মণীশ সিসোদিয়া বলেছিলেন, 'রাজনীতিতে অরবিন্দ কেজরিওয়াল আমার গুরু'। তিনি আমাকে অনেক ভালোবাসা ও সম্মান দিয়েছেন। আমি তাকে বলতে চাই কেজরিওয়াল জি, আপনি কাজ করে যান। আমাকে হয়তো ৭-৮ মাস জেলে থাকতে হবে কিন্তু দেশের জন্য আপনার মতো নেতা দরকার। মানুষের সেবা করতে থাকুন। আপনার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। এসব জেল, মিথ্যা মামলাকে আমরা ভয় পাই না। এমনকি সিবিআই-ইডি যারা এই ভুয়ো মামলা দায়ের করেছে তারাও জানে আমি নির্দোষ। কিন্তু তারাও প্রবল চাপের মধ্যে পড়ে এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছে।
অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পর আম আদমি পার্টিতে 'সেকেণ্ড ইন কমাণ্ড' মণীশ সিসোদিয়া। তিনি দিল্লি সরকারের শিক্ষা, অর্থ, শ্রম দফতরের মত একাধিক দফতরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে, মনীশ সিসোদিয়া শুধু অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জন্যই নয়, সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সিসোদিয়ার গ্রেফতারি নিয়ে ইতিমধ্যেই চড়ছে উত্তেজনার পারদ। গত বছরের জুনে দিল্লির তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের পরে ফের সিবিআই র্যাডারে দিল্লির আরেক হেভিওয়েট নেতা। দিল্লির মদ নীতির মামলায় কয়েক ঘন্টা জেরার পর রবিবারই গ্রেফতার হয়েছেন তিনি ।
আম আদমি পার্টি সূত্রে খবর, এই গ্রেফতারের পর দলীয় নেতৃত্ব কিছুটা অসস্তিতে রয়েছে। সিসোদিয়া এমন এক সময়ে গ্রেফতার হয়েছেন, যখন দলের প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল 'জাতীয় রাজনীতিতে' বড় অঙ্ক পরিকল্পনা করছেন। AAP-কে জাতীয় দলের মর্যাদা দেওয়ার পরে, কেজরিওয়াল আগামী মাসে চারটি রাজ্যে সফরে যাবেন - কর্ণাটক, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থান। ভোটের লড়াইয়ে আপকে আরও অক্সিজেন প্রদান করতেই তার এই সফর। কিন্তু সিসোদিয়ার এই গ্রেফতারের পর দলের পরিকল্পনা অনেকটাই বদলের সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।