গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট ১৪টি বিরোধী দলের যৌথভাবে দায়ের করা একটি আবেদন গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে। বিরোধী নেতাদের অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্বিচারে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। কিন্তু, এই ব্যাপারে যথাযোগ্য প্রমাণ বিরোধীদের হাতে নেই। সেকথা মাথায় রেখে সুপ্রিম কোর্ট ওই আবেদন খারিজ করেছে।
আবেদনকারী দলগুলোর মধ্যে ছিল- ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, দ্রাবিড় মুনেত্রা কাঝাগম, রাষ্ট্রীয় জনতা দল, ভারত রাষ্ট্র সমিতি, তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি, শিবসেনা (ইউবিটি), ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, জনতা দল (ইউনাইটেড), ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই), ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), সমাজবাদী পার্টি এবং জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স। এই দলগুলির মধ্যে অনেকগুলোই রাজ্যস্তরে পরস্পরের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু, তারপরও এইসব দল একই আবেদনপত্রে যৌথভাবে স্বাক্ষর করতে রাজি হয়েছিল। যা অবশ্যই ব্যাতিক্রম।
এই মামলার আবেদনের অনুমতি দিতে অস্বীকার করার সময় সুপ্রিম কোর্ট মৌখিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে যে, 'একজন রাজনৈতিক নেতা মূলত একজন নাগরিক। নাগরিক হিসেবে আমরা সবাই একই আইনের দ্বারা পরিচালিত। রাজনৈতিক নেতারাও সেই আইনের বাইরে নন।' তাই রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করতে পারবে না, এমন নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়। পাশাপাশি, শীর্ষ আদালতে বেঞ্চের আরও পর্যবেক্ষণ ছিল, কোনও মামলায় তথ্যের সঙ্গে সম্পর্ক না-রেখে নির্দেশ দেওয়া বা সাধারণ নির্দেশিকা দেওয়াটা বিপজ্জনক হবে। আর তাই বিরোধীদের আবেদন খারিজ করা হয়।
আরও পড়ুন- বসুন্ধরা সরকারের দুর্নীতি প্রসঙ্গে পাইলটের লেখা চিঠিতেও নীরব মুখ্যমন্ত্রী, গেহলটের বিরুদ্ধেই অনশনের ডাক!
তবে কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি-সহ বিরোধী দলের নেতাদের পালটা বক্তব্য, আইন সকলের জন্য সমান। কিন্তু, কেন্দ্রে বা রাজ্যগুলোয় অর্থপূর্ণ বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্রের অস্তিত্ব থাকতে পারে না। তাই রাজনৈতিক বিরোধীদের একটি পৃথক শ্রেণি হিসেবেই বিবেচনা করা দরকার। যাকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, এমনকী গোয়েন্দা ব্যবস্থার নির্বিচার ও হাস্যকর ব্যবহার থেকে বাঁচানো রাষ্ট্রের কর্তব্য। না-হলে, গণতন্ত্র ধ্বংস হতে বাধ্য।