Advertisment

জনসেবায় টোটো কিনলেন বাংলার 'রিকশাওয়ালা' বিধায়ক

"আমি আজ টোটো কিনেছি। অন্যরা জন্মজাত নেতা, বিধায়ক তাঁদের কথা আলাদা। আমি রিক্সাওয়ালা, মুটে-মজুর, ঝিয়ের সন্তান। আমাকে কী আর বাবুগিরি দেখানো চলে!"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
manoranjan byapari MLA Balagarh bought Toto for human service

স্টিয়ারিং হাতে টোটোয় চালকের আসনে বিধায়ক।

পেশায় রিক্সাওয়ালা। দিন কাটিয়েছেন রেলস্টেশনেও। জীবিকা নির্বাহের জন্য মুটে, মজুরের কাজও করেছেন। বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন টোটো কিনেছেন। এবার সেই টোটো নিয়ে বলাগড় এলাকায় লোকের সুখ-দুঃখের খবর নেবেন রিক্সাওয়ালা-লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। বুধবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তিনি বলেন, "আমি আজ টোটো কিনেছি। অন্যরা জন্মজাত নেতা, বিধায়ক তাঁদের কথা আলাদা। আমি রিক্সাওয়ালা, মুটে-মজুর, ঝিয়ের সন্তান। আমাকে কী আর বাবুগিরি দেখানো চলে!"

Advertisment

দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর এলাকায় রিক্সা চালিয়ে দিনাতিপাত করেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তবে লেখক হিসাবেও পরিচিতি রয়েছে তাঁর। সদ্য বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর নাম প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুগলির বলাগড় কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন মনোরঞ্জনবাবু। এবার তিনি প্রমাণ করতে চান বিধায়ক হলেও তিনি সাধারণ মানুষের মতোই জীবন নির্বাহ করেন। বলাগড়ে বাড়ি ভাড়াও নিয়েছেন। বুধবারই নতুন টোটো বলাগড় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে বলে তিনি জানান। বিধায়ক জানিয়েছেন, জনগণের দানের অর্থেই এই টোটো কেনা হয়েছে।

publive-image
বলাগড়বাসীর সেবায় টোটো কিনেছেন বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় নির্বাচনে জয়ের পর বিধায়ক, সাংসদদের চলন-বলন বদলে গিয়েছে। এখন তো কাউন্সিলর বা পঞ্চায়েত সদস্যদের একটা বড় অংশেরও পা মাটিতে পড়ে না। এদিন টোটো নিয়ে নিজের এলাকায় ঘুরেছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। হাত সেট করেছেন। কেন এই টোটো কিনেছেন? মনোরঞ্জনবাবু তার বিস্তারিত ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে। মনোরঞ্জনবাবু বলেন, "প্রথমত, সরু গলিতে টোটো নিয়ে ঘুরে-বেড়াতে কোনও অসুবিধা হবে না। পা খারাপ, ভাল করে হাঁটতে পারি না। যে কোনও চায়ের দোকানে আড্ডা মারব, বাজারে ঢুকে যাব। যেখানে খুশি চলে যাব। লোকজনের সঙ্গে মিশব। তাঁদের কথা শুনবো।"

জনপ্রতিনিধি চার-চাকায় ঘুরে বেড়ালে মানুষ যে ভালভাবে নেয় না সেকথাও বলেছেন বছর ছাপ্পান্নর বিধায়ক। মনোরঞ্জনবাবু বলেন, "দ্বিতীয়ত ভাড়ার গাড়ি বা নিজের চারচাকা গাড়ি থেকে সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে যখন নামব তখন সাধারণ মানুষ ভয় পাবে। এসব ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ দূরে সরে যায়। কাছে আসতে চায় না।" তাঁর কথায়, "টোটো থেকে নামলে সাধারণ মানুষ আপনজন-কাছের মানুষ ভাবতে বাধ্য। ভীতিকারক নয়,আমিতো ভীতিকারক হয়ে উঠতে চাই না। আমি তো কাজের মানুষ, কাছের মানুষ হয়ে উঠতে চাই।" নিয়ত বেড়ে চলেছে জ্বালানী তেলের দাম। "পেট্রল-ডিজেলের যা দাম বেড়েছে তাতে গাড়িতে চড়া দুস্কর হয়ে যাবে। এসব ভেবেই কিনলাম।" বলেন রিক্সাওয়ালা বিধায়ক।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc Monoranjan Byapari
Advertisment