দুশোর বেশি আসন নিয়ে বাংলায় সরকার গঠন এখন সোনার পাথরবাটি। ৭৭-এ আটকে গিয়েছে বিজেপি। দুই বিধায়ক আবার পদ ছাড়ায় পদ্মশিবিরের এখন বিধায়ক সংখ্যা ৭৫। ইতিমধ্যে অভিযোগ, ‘জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত। এই আবহে রাজ্যের বিরোধী দল হিসেবে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করতেই নাকানিচোবানি খাচ্ছে গেরুয়া শিবির। এই বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছতে একাধিক বৈঠক ডাকা হলেও তাতে সাড়া দিচ্ছেন না অনেকে। এঁদের মধ্যে বড় অংশ বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত। কিংবা তৃণমূল থেকে ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
বৈঠকে ডাক পেয়েও হাজির না হওয়ার ছবি বেশি স্পষ্ট হয়েছে শুক্রবার । বিভিন্ন জেলার পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য হেস্টিংসে দলের দফতরে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল সব পদাধিকারী ও প্রধান নেতাদের। কিন্তু সেখানে উপস্থিতির হার ছিল নগন্য। বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্য বিজেপির দায়িত্বে এসেছেন অন্যতম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘ। তিনি ছাড়াও শুক্রবারের বৈঠকে ছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। ছিলেন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
বিজেপি-তে সাধারণ সম্পাদক পদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্যে মোট পাঁচ জন এই পদে রয়েছেন। এঁদের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সঞ্জয় সিংহ এবং সায়ন্তন বসু। আসেননি জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো, লকেট চট্টোপাধ্যায়, রথীন বসু। রাজ্য বিজেপি-তে সহ সভাপতি রয়েছেন ১২ জন। তাঁদের মধ্যে জনা চারেক হাজির ছিলেন শুক্রবারের বৈঠকে। ১০ জন রাজ্য সম্পাদকের অনেকে আসেননি। এ ছাড়াও রাজ্য কমিটির বাছাই কয়েকজন সদস্যকে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিধাননগরে পরাজিত প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত। তিনি আসেননি। ডাক পেয়েও গরহাজির ছিলেন ডোমজুড়ে পরাজিত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্য বিজেপি-র এক নেতার দাবি, ভোট পরবর্তী সময়ে এঁদের অনেকেই কোনও বৈঠকে আসছেন না। দলের বৈঠকে খুবই অনিয়মিত সহ-সভাপতিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুখ প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষও।
বৈঠকে অনেকেই যে আসেননি তা মানছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। তাঁর দাবি, “করোনা পরিস্থিতির জন্য যাঁরা দূরে থাকেন, তাঁদের অনেকে আসতে পারেননি। আবার অনেক অসুস্থ। এ ছাড়াও কারও কারও এলাকায় এত বেশি সন্ত্রাস হচ্ছে, যে তাঁরা এলাকা ছেড়ে কলকাতায় আসতে পারছেন না। কেউ কর্মীদের সামলাচ্ছেন। কেউ নিজের উপর হামলার ভয় পাচ্ছেন। তবে সকলেই দলের যোগাযোগের মধ্যে রয়েছেন।”
দিলীপের দাবি অবশ্য মানতে রাজি নয় দলেরই একাংশ। তাঁরা বলছেন, ‘যাঁরা শুধুই বিধায়ক হওয়ার জন্য বিজেপি-তে এসেছিলেন, তাঁদের অনেকেই হেরে যাওয়ার পরে আর রাজনীতি করবেন কি না সন্দেহ। কেউ কেউ রাজ্য নেতাদেরও ফোনও ধরছেন না।‘