Bengal BJP: একুশের ভোটের পর থেকেই রাজ্য বিজেপিতে কোন্দল প্রকাশ্যে। বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের দায় ঘাড়ে চাপাতেই ব্যস্ত রাজ্য নেতৃত্ব। সেই কোন্দল আরও বেড়েছে কলকাতা পুরভোটের ফল ঘোষণার পর। প্রত্যাশার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি গেরুয়া শিবির। ২০% ভোট খুইয়ে মাত্র তিনটি ওয়ার্ডে জয়লাভ করেছেন পদ্মপ্রার্থীরা। পাশাপাশি ৫ বছর আগের ভোট ধরে রেখে পুরসভার ৬৫টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে বাম প্রার্থীরা। অর্থাৎ এই পুরভোট দেখেছে বিরোধী ময়দানে বামেদের উত্থান এবং বিজেপির রক্তক্ষরণ।
এই আবহে বিজেপির ৩২ সদস্যের নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণা করেছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তারপর থেকেই আরও সপ্তমে উঠেছে বিদ্রোহের সুর। সেই কমিটিতে জায়গা না পেয়ে বিজেপির একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়েছেন ৯ জন বিধায়ক। দলীয় নেতৃত্বের বিরোধিতা করে প্রতীকী প্রতিবাদ স্বরূপ এই সিদ্ধান্ত। ঘনিষ্ঠ মহলে এমনটাই জানান ওই ৯ বিজেপি বিধায়ক। জানা গিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন মুকুটমনি অধিকারী, সুব্রত ঠাকুর, অম্বিকা রায়, অশোক কীর্তনিয়া এবং অসীম সরকার। এই পাঁচ বিধায়ক মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত। এমনটাই দলীয় সুত্রে খবর।
এদের দেখাদেখি গ্রুপ ছাড়েন বাঁকুড়া জেলার বিজেপির চার বিধায়ক অমরনাথ সখা, দিবাকর ঘরামি, নিলাদ্রি দানা এবং নির্মল ধারা। ঘটনাচক্রে মতুয়া এবং জঙ্গলমহলের জেলা হিসেবে পরিচিত বাঁকুড়া, গত দুই বছর ধরে বিজেপিতে ভরসা রেখেছে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বাঁকুড়ার জেলার দু’টি লোকসভা আসন পেয়েছে পদ্মশিবির। একইভাবে মতুয়া ভোটার অধ্যুষিত বনগাঁ লোকসভায় জয় পেয়েছেন বিজেপির শান্তনু ঠাকুর। সেই ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে একুশের ভোটেও। এই দুই জায়গা থেকেই ভোট নিজেদের ঝুলিতে টানতে সমর্থ ছিল গেরুয়া শিবির।
কিন্তু বিজেপির রাজ্য কমিটিতে জায়গা না পেয়েই এই নয় বিধায়ক বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে। এমনটাই খবর গেরুয়া দলের অন্দরে। এঁদের মধ্যে এক বিধায়ক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘কিছু জিনিস দলে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে বলতে পারি দলকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড়াতে যারা সাহায্য করেছিল, তাঁরা যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না।‘
অপর এক বিধায়ক অসীম সরকারের মন্তব্য, ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ মানে ব্যক্তিগত পরিসর। কিন্তু সেই গ্রুপের আলোচনা প্রকাশ্যে চলে আসছে। এখানেই আমার আপত্তি।‘ তবে কয়েকজন বিধায়ক আবার ভুল করে গ্রুপ ছাড়ার জন্য রাজ্য সভাপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে গ্রুপে ফের যোগ দিতে চেয়েছেন।‘ তবে দলে বিদ্রোহ নেই বলে দাবি করেছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘পুরোটাই সংবাদ মাধ্যমের তৈরি। বঙ্গ বিজেপি ঐক্যবদ্ধই রয়েছে।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন