Advertisment

‘এক দেশ এক নির্বাচন’ নিয়ে আট সদস্যর কমিটি গঠন, গুরুদায়িত্ব কাদের কাঁধে?

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় সরকার 'ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন' তদন্তের জন্য ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Harish Salve, Subhash C Kashyap, Sanjay Kothari and N K Singh are also on the panel, which will be headed by Ram Nath Kovind

লোকসভা ও রাজ্যে-রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনগুলি একই সময়ে করা যায় কিনা সেব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই লক্ষ্যেই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, রাজ্যসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ, হরিশ সালভে, সঞ্জয় কোঠারি, সুভাষ সি কাশ্যপ, এনকে সিং, অধীর চৌধুরী।  কমিটিতে রাজ্যসভায় কংগ্রেসের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে রাখা হয়নি। এতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অধীর চৌধুরী। সেই কারণেই কমিটির সদস্যপদ প্রত্যাখ্যানও করেন তিনি।

Advertisment

‘ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন’ কমিটি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করার সময়, কেন্দ্রীয় সরকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের সভাপতিত্বে একটি আট সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। এরপর থেকে দেশজুড়ে অনেক রাজনৈতিক দলকে এর বিরোধিতায় কোমর বেঁধে নেমেছে। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন’ নীতি চালু হলে রাজ্যের ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলি তাদের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবে। এমন পরিস্থিতিতে এই নীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টির প্রধান।

ওম প্রকাশ রাজভর এই নীতিকে সমর্থন করে বলেছিলেন যে 'এই নীতি অনেক আগেই তৈরি করা উচিত ছিল... কিন্তু কংগ্রেস সরকার এবং অন্যান্য সরকারগুলি কেবল এটি নিয়ে আলোচনা করেছে... ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন নীতির বাস্তবায়ন আজ একান্তভাবেই প্রয়োজন। দেশের বেশিরভাগ নির্বাচনে যে অর্থ ব্যয় করা হয় সেই অর্থ এবার থেকে দেশের দেশের অর্থ ব্যয় হবে দেশের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করা হবে’।

আরও পড়ুন: < ‘শেফ লালুর’ হাতে অন্যমাত্রা পেল ‘চম্পারণ মাটন হান্ডি’, চেটেপুটে উপভোগ রাহুলের! >

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন পলিসির জন্য গঠিত কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে, যেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ, অর্থ কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। এন কে সিং প্রাক্তন লোকসভা মহাসচিব সুভাষ সি কাশ্যপ, হরিশ সালভে এবং প্রাক্তন সিভিসি সঞ্জয় কোঠারিকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় সরকার 'ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন' তদন্তের জন্য ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ। আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে মনোনীত হয়েছেন।

কমিটির সদস্য হিসেবে যাদের নাম উঠে এসেছে তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী, রাজ্যসভার প্রাক্তন এলওপি গুলাম নবি আজাদ, প্রাক্তন অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান এন কে সিং, প্রাক্তন লোকসভা মহাসচিব সুভাষ সি কাশ্যপ, সিনিয়র অ্যাডভোকেট হরিশ সালভে এবং প্রাক্তন সিভিসি সঞ্জয় কোঠারি।

আরও পড়ুন: < চিতা মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন নামিবিয়ার রাষ্ট্রদূত, ‘প্রোজেক্ট চিতা’ নিয়ে হাজারো প্রশ্নের মাঝেই এল বড় বিবৃতি  >

কমিটির চেয়ারম্যান রাম নাথ কোবিন্দ

রাম নাথ কোবিন্দ (৭৭) ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনিই উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রথম ব্যক্তি যিনি রাষ্ট্রপতির চেয়ারে বসেন। এর আগে ২০১৫-২০১৭ সাল পর্যন্ত বিহারের রাজ্যপাল হিসাবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও, তিনি ১৯৯৪ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে, তিনি ১৬ বছর ধরে আইন পেশায় নিযুক্ত ছিলেন এবং ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দিল্লি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিসও করেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

সিনিয়র বিজেপি নেতা অমিত শাহ (৫৮) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি, গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ছিলেন। তিনি ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে গুজরাটের গান্ধী নগর আসন থেকে সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হন।  এর আগে তিনি রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। মোদী সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পরে, তিনি জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার মত একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি ২০১৪ সাল থেকে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (NDA)-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী

অধীর রঞ্জন চৌধুরী (৬৭) লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা। তিনি বহরমপুর আসন থেকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির বর্তমান সভাপতিও। তবে তিনি বর্তমানে কমিটির সদস্যপদ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

অধীর রঞ্জন চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসের এক হেভিওয়েট নেতা। ২০১২ সালে, তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মন্ত্রিসভায় রেল প্রতিমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত হন। ২০১৯-এর জুনে তিনি লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা নির্বাচিত হন।

জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবী আজাদ

গুলাম নবী আজাদ (৭৪) জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভায় বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। তিনি ২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মনমোহন সিং সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।

আজাদ ২০২২ সালের আগস্টে কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর তিনি গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল আজাদ পার্টি নামে একটি দল গঠন করেন। তিনি ২০২২ সালে পদ্মভূষণে ভূষিত হন।

অর্থ কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এন কে সিং

নন্দ কিশোর সিং (৮২) একজন রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ এবং প্রাক্তন IAS আধিকারিক। তিনি রাজ্যসভার সদস্য (২০০৮-২০১৪) হিসাবে তার দায়িত্ব সামলেছেন। ২০১৪ সালে, এন কে সিং জনতা দল (ইউনাইটেড) ছেড়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) যোগ দেন। ২৭ নভেম্বর ২০১৭-এ, মোদী সরকার তাকে ভারতের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে।

লোকসভার প্রাক্তন মহাসচিব সুভাষ সি কাশ্যপ

সুভাষ কাশ্যপ লোকসভার প্রাক্তন মহাসচিব। তিনি ১৯৮৪ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এই পদে আসীন ছিলেন। তিনি সংবিধানের কাজ পর্যালোচনা করার জন্য জাতীয় কমিশনের সদস্য এবং এর খসড়া ও সম্পাদকীয় কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের ক্ষেত্রে তিনি পদ্মভূষণ পুরস্কারও পেয়েছেন।

সিনিয়র অ্যাডভোকেট হরিশ সালভে

হরিশ সালভে (৬৮) সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করছেন একজন সিনিয়র আইনজীবী। তিনি ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ভারতের সলিসিটর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) কুলভূষণ যাদবের মামলাও লড়েছেন তিনি। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে, তিনি ব্রিটেন এবং ওয়েলসের আদালতে রানীর পরামর্শদাতা হিসাবে নিযুক্ত হন।

প্রাক্তন সিভিসি সঞ্জয় কোঠারি

সঞ্জয় কোঠারি ১৯৭৮ সালের হরিয়ানা ক্যাডারের আইএএস অফিসার। তিনি চিফ ভিজিল্যান্স কমিশনারও ছিলেন। এছাড়াও ২০১৬ সালের নভেম্বরে, তিনি সরকারি মালিকানাধীন পাবলিক এন্টারপ্রাইজ সিলেকশন বোর্ডের (PESB) প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন।

কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে যে একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে গঠিত উচ্চ-পর্যায়ের কমিটি অবিলম্বে কাজ শুরু করবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কমিটি তার সুপারিশ পেশ করবে।

Election modi
Advertisment