ভোট বিপর্যয়ের পর থেকেই ৬ মুরলিধর লেনের অন্দরে কোন্দল। পরাজয়ের পালা বিশ্লেষণের সঙ্গেই চলছে একে অপরকে দোষারোপের পালা। একদম আনকোরাদের ভোটের আগে দলীয় পতাকা তুলে দেওয়া tথেকে শুরু করে নবাগতদের মুড়িমুড়কির মতো কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে চলছে কলহ।
বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব সূত্রে খবর, কোনও নেতার ওপরে হামলা বা প্রাণনাশের আশঙ্কা থাকলে তবেই রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকার সংশ্লিষ্ট নেতা বা নেত্রীকে নিরাপত্তা দেয়।তাঁর অবস্থান বিবেচনা করে ঠিক হয় ক্যাটাগরির ধরন।
কিন্তু বিজেপি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যস্তরে এতটাই জলঘোলা শুরু হয়েছে যে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে পাওয়া অনেকের নিরাপত্তা এবার তুলে নিতে চাইছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যদিও কার নিরাপত্তা বহাল থাকা দরকার আর কার নয়, তা নিয়ে বিতর্ক এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছেড়ে অমিত শাহকে চিঠি পাঠিয়েছেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
এদিকে, বিজেপি সাংসদ হিসেবে নিশীথ অধিকারী এবং জগন্নাথ সরকার বিধানসভা ভোটে জিতেও ইস্তফা দিয়েছেন। ফলে এখন রাজ্যে বিজেপি-র বিধায়ক সংখ্যা ৭৫। শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়-সহ তাঁদের অনেকেই নির্বাচনের আগে থেকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেতেন। সেগুলি বহাল আছে এবং থাকবে। তার পাশাপাশি এখন ৬৬ জন বিধায়ক বিভিন্ন ক্যাটিগরির কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাচ্ছেন।
বেশির ভাগের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ‘এক্স’ ক্যাটিগরি হলেও শুভেন্দু-মুকুল পান ‘জেড’ ক্যাটিগরি। তিন বিধায়ক পান ‘ওয়াই’ ক্যাটিগরি। বেশ কয়েকজন সাংসদও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান। বিতর্ক ঠিক বিধানসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়া নিয়ে। বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ঝুঁকির আশঙ্কা জানিয়ে অনেকেই নিরাপত্তা নিয়েছিলেন।
অভিনয় জগতের প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় থেকে হিরণ চট্টোপাধ্যায়রা ‘ওয়াই’ ক্যাটিগরির নিরাপত্তা পেয়েছিলেন। বিজেপি-র হয়ে প্রচারে নামা মিঠুন চক্রবর্তীকে দেওয়া হয় ‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটিগরির কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা। এ ছাড়াও অনেক প্রার্থী এবং নেতা আবেদন করেই নিরাপত্তা পেয়ে যান। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, ওই ধরনের আবেদনের সুপারিশ মূলত করতেন রাজ্য পর্যায়ের দুই প্রথমসারির নেতা।
এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছেন, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বলয়ে থাকা যে সব প্রার্থীরা পরাজিত, তাঁদের নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হোক। সেই নিরাপত্তায় মোতায়েন জওয়ানদের ব্যবহার করা হোক বিজয়ীদের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও তেমনই চায় বলে বিজেপি সূত্রের খবর।