লকডাউনে ভিন রাজ্যে আটকে থাকা বাংলার মানুষের জন্য এবার আরও ৮টি ট্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর আগে দুটো ট্রেনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। শীঘ্রই এই ৮টি ট্রেনে বাংলার বাইরে আটকে থাকা মানুষদের নিয়ে আসা হবে। লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরীর দাবি, তাঁদের আন্দোলনের জন্যই এই ট্রেনকে রাজ্যে ঢোকার অনুমতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, তৃণমূল নেতৃত্ব অধীর চৌধুরীর এই বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
শনিবার অধীর চৌধুরী বলেন, "বাংলার দুরবস্থা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলেছি। তারপর উনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। যার ফলে আটটি ট্রেনকে এ রাজ্যে ঢোকার অনুমতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।" এদিকে তৃণমূলের মন্ত্রী ও সাংসদরা জানিয়ে দিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য রাজ্য কাজ করছে। আরও আটটি ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৮০ হাজার লোক এখানে ফিরেছ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে অন্য় রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন।
আরও পড়ুন- ‘বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি অন্যায় হচ্ছে’, মমতাকে চিঠি শাহের
বাইরে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আর আটটা ট্রেন নিচ্ছে রাজ্য সরকার। অধীরের বক্তব্য, "ট্রেন দেওয়ার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে আমরা লড়াই, সংগ্রাম করে চলেছি। সাধারণ মানুষের দুঃখ দুর্দশা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে জানিয়েছি। তার কিছু সুফল আমরা লক্ষ্য করছি। আমি গত পরশু অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলেছি। তখন অমিত শাহ বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ট্রেন নিতে চাইছে না। আমরা কী করব? আপনারা সরকারকে বলুন যাতে ট্রেন নেয়। তারপর জেনেছি ৮টা ট্রেন বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে এই ৮টা ট্রেনে সমস্যার সমাধান হবে না।"
আরও পড়ুন- বিরোধীদের তোপের মুখে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য টোল ফ্রি নাম্বার চালু রাজ্যে প্রশাসনের
প্রসঙ্গত, এখনও রাজ্যের বাইরে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক আটকে রয়েছেন। তাঁদের ফেরানো নিয়ে কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি নেতৃত্ব একাধিকবার দাবি জানিয়ে আসছে। প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য, "দেশে ট্রেনের কোনও অভাব নেই। শুধু পৌঁছে দেওয়ার তৎরতার অভাব। প্রতিদিন আড়াই কোটি লোক যাতায়াত করে ট্রেনে।" এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের প্রশংসাও করেছেন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, "রাজ্য কিছুটা হলেও নরম হয়েছে। আপনারা বুঝতে পারছেন মানুষের দুঃখ দুর্দশা। ভাল লাগছে। কিন্তু আরও বেশি বেশি করে মানুষকে নিয়ে আসার জন্য সচেষ্ট হন।"
এদিকে অধীরের এই বক্তব্যে বেজায় চটেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও'ব্রায়েন বলেন, "অধীরবাবু দিল্লিতে আছেন, অমিত শাহ দিল্লিতে আছেন। ওরা নিজেদের মধ্যে কি কথা হচ্ছে আমি জানি না।" রাজর্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বিজেপির মত রাজনীতির ঘোলা জলে রাজনীতি করছেন অধীর চৌধুরীও। অথচ করোনা মোকাবিলায় মানুষের পাশে নেই। মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগ নিচ্ছেন। আর ক্রেডিট নিতে চাইছেন উনি।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন