কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী সোমবার ঘোষণা করেছেন, তাঁর দল কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে দেশের গরিব মানুষদের ন্যূনতম রোজগার নিশ্চিত করা হবে। কংগ্রেসের নেতারা রাহুলের এ ঘোষণাকে লোকসভা ভোটের আগে মাস্টারস্ট্রোক হিসেবে দেখছেন। রাহুল গান্ধী এ ঘোষণা করেছেন ছত্তিসগড়ে, যেখানে কয়েকদিন আগেই বিধানসভা ভোটে বেশ বলার মত জয় পেয়েছে কংগ্রেস। তবে রাহুলের এ ঘোষণা চিত্তাকর্ষক হলেও একেবারে নতুন কিছু নেই।
আরও পড়ুন, উরি! স্মৃতির উদ্যোগে রাহুলের আমেঠিতে মোবাইল থিয়েটার
তেলেঙ্গানা এবং ওড়িশায় এই ধারণা অবলম্বনে কাজ হয়েছে এবং ঝাড়খণ্ড সরকারও এ ধরনের প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছে। তবে এ সবই হয়েছে কৃষকদের জন্য।
সম্প্রতি সিকিমের শাসক দল ঘোষণা করেছে যে তারা সার্বজনীন ন্যূনতম রোজগার প্রকল্প চালু করবে। তারা জানিয়েছে, আগামী ২০২২ সালে ক্ষমতায় ফিরলে এই প্রকল্প লাগু হবে। মুখ্যমন্ত্রী পবন কুমার চামলিং সিকিমে ১৯৯৪ সালে থেকে ক্ষমতায় আছেন।
তবে ঘটনা হল যে জাতীয় স্তরে এই ঘোষণা এই প্রথম। এই ঘোষণার সময়টিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ রাজধানীর ক্ষমতার অলিন্দে কানাঘুষো চলছে যে নরেন্দ্র মোদী সরকার ভোটারদের উদ্দেশে এ সপ্তাহেই বড়সড় কোনও ঘোষণা করতে পারেন। ফলে অনেকেই রাহুলের এ ঘোষণাকে আগেভাগে তীর মারার সঙ্গে তুলনা করছেন।
নিজের প্রতিশ্রুতির কথা টুইটে ফের একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন রাহুল। বলেছেন, "আমাদের লাখলাখ ভাইবোনেরা যদি দারিদ্র্যের মধ্যে থাকেন তাহলে আমরা নয়া ভারত গড়তে পারব না। ২০১৯ সালে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে প্রত্যেক গরিব মানুষের জন্য ন্যূনতম রোজগারের ব্যবস্থা করবে। এটাই আমাদের ভিশন, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি।"
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম টুইটারে লিখেছেন, "কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ছত্তিসগড়ে কৃষক সমাবেশে যে ঘোষণা করেছেন তা ঐতিহাসিক এবং দরিদ্র মানুষের জীবনে বড়সড় বদল আনবে। সার্বজনীন ন্যূনতম আয়ের নীতি নিয়ে গত দুবছর ধরে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। এবার সময় হয়েছে সেই নীতিকে আমাদের অবস্থানুযায়ী কাজে লাগানোর। আমরা আমাদের পরিকল্পনা কংগ্রেসের ইশতেহারে ব্যাখ্যা করব। কংগ্রেস রাহুল গান্ধীর প্রতিশ্রুতি পালনের ব্যবস্থা করবে।"
রাহুলের প্রতিশ্রুতি রাজনৈতিকভাবে কংগ্রেসের উপকারে লাগতে পারে। ঋণমকুবের ব্যাপারে দলের প্রতিশ্রুতি ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানের জয়ে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এবং দলের সভাপতি অমিত শাহ সহ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব কৃষকদের ঋণ মকুবের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে বিজেপি কর্মীরা গ্রামীণ ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় হতে পারে এমন কিছু সরকারি ঘোষণার প্রত্যাশায় রয়েছেন। দলের কিষাণ মোর্চার সভাপতি জানিয়েছেন, সরকার গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘোষণা করতে চলেছে।