ভোট আসন্ন। বঙ্গ রাজনীতিতে দলবদলে নয়া মোড়ের অপেক্ষা? ষোড়শ বিধানসভার শেষ দিনে ঘাস-ফুল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া দুই তৃণমূল বিধায়কের ঘরওয়াপসির জল্পনা তুঙ্গে।
সোমবার বিধানসভা অধিবেশনের শেষ দিনে জেলা নেতৃত্বের উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন বনগাঁ উত্তরেরর বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিং। বিশ্বজিৎকে মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতেও দেখা যায়। যা ঘিরে চর্চা তুঙ্গে। প্রশ্ন তাহলে কী বিজেপি ঘুরে ফের তৃণমূলে আসতে চলেছেন নোয়াপাড়া এবং বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক?
যদিও জল্পনায় জল ঢেলেছেন উত্তর ২৪ পুরগনার দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। বিধায়ক তহবিলের বরাদ্দ নিয়ে আলোচনার জন্যই দুই বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে দাবি তাঁর। একই দাবি শোনা গিয়েছে অর্জুনের সিংয়ের আত্মীয় তৃণমূল ত্যাগী বিধায়ক সুনীল সিংয়ের গলাতেও। মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্বজিৎ দাসের প্রণাম প্রসঙ্গে পার্থবাবু বলেছেন, '৯৮ সাল থেকে ও তৃণমূল করেছে। নেত্রীকে দেখা হলে প্রণাম করবে এটাই তো বাঙালির সংস্কৃতি। বিজেপি সেটা শেষ করার চেষ্টা করে চলেছে। তবে ওদের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে কোনও কথা হয়নি।'
বিশ্বজিৎ দাস বলেছেন, 'পঞ্চায়েত সমিতি বিধায়ক তহবিলের টাকায় কাজ করছে না তাই মুখ্যমন্ত্রীকে জানালাম। উনি তো সবার মুখ্যমন্ত্রী।' তাহলে কী ফের তৃণমূলে ফিরছেন তিনি? জবাবে বিশ্বজিৎ বলেন, 'এদিনের সাক্ষাতের সঙ্গে দল বদলের কোনও সম্পর্ক নেই।'
আরও পড়ুন: ‘মিথ্যা বলাই মোদীর অভ্যাস’, বিধানসভায় কড়া তোপ মমতার
একসময় তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন বিধায়ক সুনীল সিং এবং বিশ্বজিৎ দাস। সুনীল সিং ছিলেন নোয়াপাড়ার এবং বনগাঁ উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন বিশ্বজিৎ দাস। তারপর গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন তাঁরা। তবে সোমবার বিধানসভার অধিবেশনের শেষ দিনের ছবি ঘিরে অন্য রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত মিলছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।
তৃণমূল নেতৃত্ব ও বা সুনীল সিং যাই বলুন না কেন, প্রশ্ন হঠাৎ বিধানসভার শেষ দিনে কেন বিধায়ক তহবিলের বরাদ্দ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বললেন সুনীল সিং ও বিশ্বজিৎ দাস। নিয়ম অনুসারে ষোড়শ বিধানসভার মেয়াদ কার্যত শেষ। আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হবে। লাগু হল নির্বাচনী বিধি। আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও কাজ আর হবে না। সীমীত মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা। তাহলে কেন বিধায়ক তহবিলের অর্থ বরাদ্দ নিয়ে মমতার সঙ্গে আলোচনা করলেন দলত্যাগী দুই বিধায়ক? এই প্রেক্ষাপটেই বনগাঁ উত্তরে ও নোয়াপাড়ার বিধায়কের ঘরওয়াপসির সম্ভাবনা প্রকট হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন