মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক হাত নিলেন নরেন্দ্র মোদী। সংবাদসংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গণপিটুনি, জিএসটি, নারীদের ক্ষমতায়ন, চাকরবাকরি ইত্যাদি নানা ইস্যুতে মুখ খুলেছেন তিনি। ২০১৯-এর ভোটে কীভাবে বিরোধীদের মোকাবিলা করা হবে বা পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের দিশা এসব নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। তবে এদিনের সাক্ষাৎকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল আসামের নাগরিকপঞ্জি। গত ৩০ জুলাই এন আর সি-র খসড়া প্রকাশের পর এই প্রথমবার এ নিয়ে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী।
এন আর সি লাগু হলে ভারতীয় নাগরিকদের নাম বাদ যাবে এই আশঙ্কার যে বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন মোদী। ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গেলে আসামে গৃহযুদ্ধ ও রক্তস্নান শুরু হতে পারে বলে মমতা যে মন্তব্য করেছেন, তার বিরোধিতা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদী বলেছেন, ‘‘যাদের নিজেদের ওপর থেকে বিশ্বাস চলে গেছে, জনগণের সমর্থন হারানোর ভয়ে যারা ভীত, এবং আমাদের প্রতিষ্ঠানের উপর যাদের বিশ্বাসের অভাব রয়েছে, তারাই শুধু ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘রক্তস্নান’, ‘দেশ কে টুকড়ে টুকড়ে’ জাতীয় মন্তব্য করতে পারে। এটা স্পষ্ট যে তারা জাতির নাড়িস্পন্দন থেকে বিচ্ছিন্ন।’’
আরও পড়ুন, ‘বিপথগামী’ বিরোধীপক্ষ গণপ্রহার নিয়ে রাজনীতি করছে, সাক্ষাৎকারে বললেন মোদী
এনআরসি নিয়ে রাজনীতি করার জন্য কংগ্রেসকেও ছেড়ে কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী। মোদী বলেছেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী আসাম চুক্তি সই করা সত্ত্বেও কংগ্রেস এনআরসি রূপায়ণের ব্যাপারে কিছুই করেনি এবং জনগণকে বিপথে চালিত করেছে।
ভারতের কোনও নাগরিককে দেশ ছেড়ে যেতে হবে না বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। যাদের নাম বাদ পড়েছে তাঁদের নিজেদের প্রমাণের ব্যাপারে সমস্তরকম সুযোগ দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘এনআরসি আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে আমরা তা পূরণ করেছি। এটা রাজনীতির বিষয় নয়, জনগণের বিষয়। এ নিয়ে যদি কেউ রাজনীতি করতে যায়, তাহলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’
সম্প্রত কংগ্রেস যে বেকারি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আক্রমণ শানিয়েছে, এদিন তা নিয়েও মুখ খোলেন মোদী। তাঁর দাবি অর্থনীতির বৃদ্ধির হার বেড়েছে, ফলে চাকরির বাজারও বাড়বে।
বিরোধীদের একযোগে লড়াই নিয়েও এদিন সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, এই মহাজোটের পিছনে কোনও আদর্শবাদ নেই। তিনি বলেন, ‘‘এই দলগুলি জনগণের কাছে নিজেদের প্রমাণ করার বহু সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু এরা দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ নিজেদের আবদ্ধ করে রেখেছে। এখন তারা জাতি, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম, এসব নিয়ে মেতে রয়েছে।’’