হরিচাঁদ ঠাকুরের আর্বিভাব তিথিতেই ঠাকুরবাড়িতে আয়োজিত বারুণী মেলার ভাষণে হিংসা, জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী। আর্জি জানালেন দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার। রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে আক্রমণ মোকাবিলার প্রসঙ্গও এলো মোদীর বক্তব্যে। বললেন, 'কোথাও রাজনৈতিক হিংসা হলে রুখে দাঁড়ান।' যা রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষিতে বিশেষ ইঙ্গিতবহ বলেই মনে করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার বাংলায় নিজের ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। স্মরণ করিয়ে দেন যে, গত বছর ভোটের সময় মতুয়াধাম বাংলাদেশের ওড়াকান্দিতে গিয়েছিলেন নমো। দাবি করেন যে, মতুয়া ঠাকুরবাড়ি তাঁকে সবসময়ই ভালোবাসা দিয়েছে। এক দেশের ভাবনা বাস্তবায়ণে শ্রী হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের দর্শন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপরই প্রধানমন্ত্রীর কথায় উঠে আসে স্বার্থের জন্য খুনোখুনি ও সমাজে জাতিভেদের প্রসঙ্গ। নিজের বক্তব্যে মোদী বলেন, 'সমাজ ভাগ করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা যখন স্বার্থের জন্য খুন, ভাষা ও জাতের ভিত্তিতে ভেদাভেদ দেখি তখন হরিচাঁদ ঠাকুরের দর্শন গুরুত্বপূর্ণ।' এ দিন মতুয়া মূল্যবোধের প্রশংসা শোনা গিয়েছে নমোর মুখে।
ক্ষমতায় এসে দুর্নীতি বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেই দুর্নীতি মুক্ত সিস্টেমের পক্ষেই বারুণী মেলায় সওয়াল করলেন তিনি। বললেন, 'আপনাদের কাছে আর্জি সিস্টেম থেকে দুর্নীতিকে দূর করতে হবে। এ জন্য সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। অন্যায় দেখলেই সোচ্চার হতে হবে, প্রতিবাদ করুন। রাজনীতিতে জোর করে বাধা দেওয়া অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ। এর বিরুদ্ধে গর্জে প্রতিবাদী হতে হবে।' পাশাপাশি, লোকাল ফর ভোকালের কথা তুলে ধরেন তিনি। জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ণে রাজ্য সরকারগুলিকে উৎসাহিত করতে হবে।
শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে হিংসার রাজনীতির অভিযোগ তুলে বরাবরই সরব বিরোধী দলগুলি। ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। নিহত হয়েছে একাধিক। সম্প্রতি, পুরনির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এরপর পানিহাটি ও ঝালদার দুই কাউন্সিলর খুনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটে গিয়েছে বগটুইয়ের মত হত্যাকাণ্ড। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর এ দিনের রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে আক্রমণ মোকাবিলার কথা বেশ তাৎপর্যবাহী।