মোদী ব্রিগেড থেকে পাততাড়ি গোটালেন চন্দন মিত্র। রাজ্যসভার দুবারের সাংসদ এই বিজেপি নেতা বুধবার নিজেই জানিয়েছিলেন বিজেপি থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন। খুব সম্ভবত তৃণমুলে যোগ দিচ্ছেন তিনি। তবে কোন দলে তিনি যোগ দেবেন তা নিয়ে খোলসা করেননি। চন্দন মিত্র বলেন, "সোমবারের আগে তিনি এব্যাপারে কোনও মন্তব্য করবেন না।" তৃণমূল সূত্রে খবর, পায়োনিয়র সম্পাদক ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এই দলে যোগ দিতে পারেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, "দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও তৃণমুল সুপ্রিমোর সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক হয়েছে এই বিজেপি সাংসদের। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সম্মতিসূচক ঈঙ্গিত দিয়েছেন। একপ্রকার নিশ্চিত টিএমসিতে যোগ দিচ্ছেন চন্দন মিত্র।
তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। খুব তাড়াতাড়ি দলে যোগ দিতে পারেন তিনি। সমস্যা না হলে ২১ জুলাই তৃণমুলের শহীদ দিবসের মিছিলে দেখা যেতে পারে তাঁকে। তবে এখনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।"
১৭ জুলাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত হয়েছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন চন্দন মিত্র। এ বিষয়ে তাঁকে যোগাযোগ করা হলে তিনি তখন কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বিজেপি নেতৃত্বের কথায় তাঁরা এই সম্বন্ধে কিছুই জানেন না। দলের সাধারণ সম্পাদক রাহুল সিনহার বক্তব্য, "আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। এটা সম্পূর্ণ ওঁর সিদ্ধান্ত।" প্রবীণ বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, "আমার ওঁর পদত্যাগের বিষয়ে কোনও খবরই ছিল না। এটা শুনে আমি অবাক হয়েছি।"
আরও পড়ুন, Narendra Modi in Bengal: মেদিনীপুর কার্যত ২০১৯ নির্বাচনী প্রচারের ড্রেস রিহার্সাল
২০০৩ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত রাজ্যসভার মনোনীত সদস্য ছিলেন চন্দন মিত্র। ২০১০-এর জুনে তিনি মধ্যপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৬-তে সেই দফা শেষ হয়েছে। তিনি দিল্লিতে বিজেপির অন্য়তম পরিচিত মুখ, দলের সঙ্কটে অনেক সময় তিনি ত্রাতা হয়ে উঠতেন। দলে আদবানী ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিতি দন্দন মিত্রর। তাই নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহর জমানায় তাঁকে অপ্রাসঙ্গিক করে দেওয়া হয়েছে দলে। ২০১৪-তে দল ক্ষমতায় এলে তাঁকে আডবাণী লবির এই নেতাকে একেবারে কোণঠাসা করে দেওয়া হয়।
সঠিক মর্যাদা না পাওয়ায় ওই সাংসদ দলের সমালোচনা করতে শুরু করেন। মে মাসে কৈরানা উপনির্বাচনে বিজেপির পরাজয়ের পর চন্দন মিত্র মন্তব্য় করেছিলেন, বিজেপি আখ চাষিদের দিকে নজর দিচ্ছে না। তখন তিনি এনডিটিভিকে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, “২০১৯ এর নির্বাচনে বিরোধীদল জোট বাঁধলে বিজেপি পক্ষে জেতা মুশকিল হয়ে যাবে।’’ ২১ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ মঞ্চে চন্দন মিত্র হাজির হলে কিছুটা হলেও ধাক্কা্ খাবে গেরুয়া শিবির।