শুভেন্দু আধিকারীর দরাজ প্রশংসা করলেন মুকুল রায়। জল্পনা উস্কে দিলেন পরিবহণমন্ত্রীর দলীয় অবস্থান নিয়ে। নন্দীগ্রামে এ দিন শুভেন্দু সভার রাজনৈতক গুরুত্বও অপরিসীম বলে মনে করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি।
ঠিক কী বলেছেন মুকুল রায়?
এ দিন রাজ্য রাজনীতির কারবারীদের নজরে ছিল তেখালিতে ভূমি উচ্ছেদ কমিটির সভা। সেখানেই বক্তব্য পেশ করেন শুভেন্দু অধিকারী। নাম না তৃণমূলের একাংশকে বার্তা দেন। বলেন, '১৩ বছর পর নন্দীগ্রামকে মনে পড়েছে? ভোটের পর আসবেন তো?' হাজরাকাটায় পালটা সভা করে তৃণমূল। মমতা ঘনিষ্ট ফিরহাদ হাকিম জানান, 'কে বলল আসিনি! ১৩ বছরে অনেকবার নন্দীগ্রামে এসেছি। আমি এসেছি, পার্থদা, বক্সীদা, পূর্ণেন্দু দা, দোলা দি অনেকবার করে নন্দীগ্রামে এসে এখানকার আন্দোলনকে সমর্থন জুগিয়েছি। এই নন্দীগ্রাম থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের উত্থান।' মুখে নাম না নিলেও তাঁর নিশানায় ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গে শুভেন্দু-তৃণমূলের এই বিভাজনই আরও উস্কে দিয়েছেন মুকুল রায়।
দুই মন্ত্রীর তোপ, পালটা তোপের মধ্যেই সল্টলেকের বাড়িতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায় নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়কের দাবিকেই সমর্থন করেন। বলেন, 'নন্দীগ্রামে তৃণমূল কোনওদিন সভা করেনি। সভাটা করত শুভেন্দুই। এবার হঠাৎ করে নন্দীগ্রামে যাওয়ার তাগিদ পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই তারা আলাদা করে সভা করতে গিয়েছে। আজ যাচ্ছে, কাল যাবে কিনা সন্দেহ।'
আরও পড়ুন- ‘আমি আমি করে কিছু হয় না’, শুভেন্দুকে পালটা ফিরহাদ
পুজোর আগে থেকেই শুভেন্দু অধিকারী একাধিক সভায় দলনেত্রীর ছবি বা তৃণমূলের প্রতীক লক্ষ্য করা যায় না। তেখালির সভাতেও ছিল একই ছবি। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই আন্দোলনের কাণ্ডারি। নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা কেউ অস্বীকার করতে পারে! আমি আমি করে কিছু হয় না। যারা ভাবছে পালে হাওয়া দিয়ে এই রাজ্যে বিজেপিকে শক্ত ভিতে দাঁড় করাবে তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে।' ফিরহাদের এই মন্তব্যই কার্যত দলের সঙ্গে অধিকারী পরিবারের মেজ ছেলের বিবাদ স্পষ্ট করেছেন।
এক্ষেত্রেও তৃণমূলের দোর্দদণ্ডপ্রতাপ নেতার পাশে দাঁড়িয়ে মুকুল রায়ের দাবি, 'এর আগে বহুবার শুভেন্দু অধিকারী যখন সভা করত তখন তৃণমূলের পতাকা বা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পোস্টার কখনোই ব্যবহার করা হয়নি।'
আরও পড়ুন- ‘চেনা বামুনের পৈতে লাগে না, রাজনীতির লড়াইয়ে দেখা হবে’, নন্দীগ্রাম দিবসে সুর চড়ালেন শুভেন্দু
শুভেন্দুর পালটা তৃণমূলের সভা করে শাসক দল চ্যালেঞ্জ ডেকে আনল বলেই মনে করেন মুকুল। তাঁর কথায়, 'তৃণমূল কংগ্রেস পাল্টা সভা করে নিজেদের দলের ভেতরে লড়াইটা প্রকাশ্যে নিয়ে চলে এলো। নিজেরাই নিজেদের সামনে চ্যালেঞ্জ তৈরি করে লড়াইয়ের পথ শক্ত করল।' এদিনে শউভেন্দু অধিকারীর সভা খুব ভাল হয়ে এবং তা টিভিতে দেখেছেন বলে জানান মুকুল।
তাহলে কী জোড়া-ফুল ছেড়ে পদ্মে যাচ্ছেন শুভেন্দু? এ প্রসঙ্গ খোলসা করেননি এই বিজেপি নেতা। দলের কোনও নেতার সঙ্গে এই নিয়ে শুভেন্দুর কথা হয়েছে কিনা তা জানানে না বলেই দাবি করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন