দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে পর পর দু’দিন বৈঠক করে খুশি বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তিনি নিজেই একথা জানালেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে। বৈঠকের পর রাজ্যে ফিরে এসে তিনি সোমবারই ফের দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন বীরভূমে। সূত্রের খবর, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে ফের গুরুদায়িত্ব পেতে পারেন বঙ্গ রাজনীতির 'চাণক্য'। দিল্লিতে 'সফল বৈঠকে' র পরই ফের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয় মুকুল রায়।
বিজেপির জাতীয় কর্ম সমিতির সদস্য মুকুল রায়কে নিয়ে সম্প্রতি রাজ্য-রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা ছড়ায়। কখনও তাঁর মন্ত্রী পদ লাভ, কখনও আবার পুরনো দলের সঙ্গে যোগাযোগ নিয়েও জল্পনা চলতে থাকে। যদিও তিনি এসব সরাসরি অস্বীকার করেছেন। তাঁর সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির একাংশের দূরত্ব রয়েছে বলেও দলের অন্দরে চর্চা জারি রয়েছে। এমনকী সম্প্রতি দলের গুটি কয়েক কর্মসূচি ছাড়া সেভাবে দেখাও যায়নি প্রাক্তন রেলমন্ত্রীকে। এই কারণেই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চরম মাত্রা নেয়। তবে প্রবীণ এই রাজনীতিক নিজেই জানিয়েছেন দীর্ঘ কয়েক মাস করোনা আবহে তাঁর দিল্লি যাওয়া হয়নি। এবার দিল্লি গেলেন। বৈঠক করলেন দলের সর্বভারতীয় শীর্ষ নেতা অমিত শাহর সঙ্গে। তারপরই ফের রাজনীতির ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছেন মুকুল।
অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে মুকুল রায় বলেন, "উনি না ডাকলে এই অবস্থায় কেউ দিল্লি যায় না। উনি ডেকে কথা না বললে কথা হত না। এক দিন না, দুদিন উনি আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। সিরিয়াস কথা হয়েছে। আমিও খুশি। রাজ্যের ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে তিনি খুব সিরিয়াস।"
বিজেপি ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ১৮টি আসনে জয় পায় এই রাজ্য থেকে। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তখন থেকেই ভাবতে শুরু করে এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনেও ভাল ফল করা সম্ভব। সম্প্রতি রাজ্য কমিটিও ঘোষণা করেছে বিজেপি। সেখানে তৃণমূল থেকে আসা নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অমিত শাহর ভার্চুয়াল জনসভায় মুকুল রায়কে বক্তা হিসাবে দল গুরুত্ব দেয়। কিন্তু মুকুল রায় কী দায়িত্ব নিয়ে কাজ করবেন বা জাতীয় কর্ম সমিতির সদস্য হয়েই থাকতে হবে কী না তা নিয়ে দলে জল্পনা ছিলই। তাই দিল্লিতে অমিত শাহর সঙ্গে মুকুল রায়ের এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল।
মুকুল বলেন, "রাজ্যে পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে কনভেনর ছিলাম। ফের পুর নির্বাচনেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।" যদিও করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে পুর নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। এবারও ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে আপনাকে কোনও বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে দল? জবাবে মুকুলবাবু বলেন, 'দেখা যাক। তবে নেতৃত্বের বিশেষ চিন্তা ভাবনাকে আমাদের এক্সিকিউট করতে হবে।"
দলের নতুন রাজ্য কমিটি নিয়ে আগেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন মুকুল রায়। কমিটি 'ব্যালান্সড' বলেও তিনি মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য যাঁদের কমিটিতে নিয়ে আসা হয়েছে তাঁদের অনেকেই মুকুলের হাত ধরে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন। সূত্রের খবর, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনেও বিশেষ দায়িত্ব পাচ্ছেন মুকুল রায়। অভিজ্ঞ মহলের মতে, ১৮ জন সাংসদ বা সংগঠন বৃদ্ধি পেলেও সামগ্রিক ভোট পরিচালনার জন্য অভিজ্ঞ পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের খোলনলচেও অন্যদের থেকে তিনিই বেশি জানেন। তাই মুকুলকে দরকার পদ্মপার্টির।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন