শেষ পর্যন্ত বিজেপির অন্যতম শীর্ষ পদ পেলেন মুকুল রায়। দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি করা হল মুকুল রায়কে। সভাপতি জে পি নাড্ডার নেতৃত্বে দল পরিচালনায় যে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাতেই সর্বভারতীয় সংগঠনে স্থান দেওয়া হল মুকুল রায়কে। বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামোর অনুসারে দ্বিতীয় সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদই সহ সভাপতির।
২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন একদা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন নুকুল রায়। রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দেন তিনি। পরে দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য করা হয় তাঁকে। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের নির্বাচন কমিটির আহ্বায়কও করা হয়েছিল তৃণমূল ত্যাগী এই নেতাকে। কিন্তু সংগঠনে উচ্চ পদ না মেলায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে মুকুল রায়কে নিয়ে। বঙ্গ বিজেপি সংগঠনেও কোনও পদে তাঁকে রাখা হয়নি। ফলে দলের মধ্যে কিছুটা গুরুত্ব হারাচ্ছিলেন মুকুল। দিলীপ-মুকুল দ্বন্দ্ব ঘিরে দলের অভ্যন্তরেও নানা গুঞ্জন ওঠে। হস্তক্ষেপ করতে হয় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য মুকুল ধৈর্য্যের সুফল পেলেন। ২১শের বিধানসভা ভোটকে মাথায় রেখেই সংগঠনের সর্বভারতীয় সহসভাপতি পদে মুকুল রায়কে বসানো হল বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রকাশিত তালিকা অনুসারে মুকুল রায়ের সঙ্গেই বিজেপির সহসভাপতির দায়িত্বে উল্লেখযোগ্য মুখের মধ্যে রয়েছেন, ছত্তিসগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিং, রাজস্থানের প্রাপ্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া, ওড়িশার জয় পাণ্ডা।
এছাড়াও বাংলা থেকে আরও কয়েকজন নেতাকে বিজেপির সর্বভারতীয় সংগঠনে জায়গা দেওয়া হয়েছে। অনুপম হাজরাকে দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক করা হয়েছে। বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরা ২০১৯ সালে ভোটের আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ওই বছরই লোকসভায় যাদবপুর থেকে পদ্ম চিহ্নে ভোট লড়েছিলেন তিনি। যদিও তৃণমূলের মিমি চক্রবর্তীর কাছে পরাজিত হন। তবে রাজনীতির ময়দান ছাড়েননি তিনি। যুব মোর্চার নানা কর্মসূচিতে দেখা যায় তাঁকে। বিভিন্ন ইস্যুতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন অনুপম।
সর্বভারতীয় পদ পেয়েই দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন অনুপম হাজরা। তিনি বলেছেন, 'দল যে দায়িত্ব দিয়েছে তার মর্যাদা রাখার চেষ্টা করব। রাজ্যের মানুষ যাতে শান্তিতে ঘুমতে যেতে পারেন তা নিশ্চিৎ করব ও সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাজির নেতৃত্বে আগামী বিধানসভা ভোটে বাংলা জয়ের জন্য ঝাঁপাব।'
অন্যদিকে, জাতীয় মুখপাত্র পদ দেওয়া হয়েছে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু সিং বিস্তকে।
তবে, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই সর্বভারতীয় সম্পাদক পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিনহাকে।
দলের দ্বিতীয় শীর্ষ পদে মুকুল রায়। সংগঠনে যে তাঁর গুরুত্ব রয়েছে শনিবার তা স্পষ্ট করেছেন মোদী, শাহ নাড্ডারা। এবার কী তাহলে বঙ্গ বিজেপির রাশও মুকুল ঘনিষ্টদের হাতেই যেতে চলেছে, ইতিমধ্যেই সেই প্রশ্ন উঁকি মারছে মুরলীধর সেন লেনে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন