৭৭ থেকে ৭২। বাংলায় ঘর ভাঙছে পদ্ম শিবিরের। মুকুল রায়ের পথেই আরও দুই বিজেপি বিধায়কের ইতিমধ্যেই ঘরওয়াপসি ঘঠেছে। অর্থাৎ তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন তাঁরা। ক্ষুব্ধ গেরুয়া দল। দলত্যাগী দুই বিধায়ককে শোকজ করেছে রাজ্যের বিরোধী দল। বিরোধী দলনেতার পক্ষে ৭ দিনের মধ্যে চাওয়া হয়েছে জবাব। বিজেপি বিধায়কদের দলে টানার পিছনে বুধবার শাসক দলের রাজনৈতিক মূল্যবোধ, নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাংলায় দলত্যাগ আইন বিজেপি কার্যকর করেই ছাড়বে বলে এদিন আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভেন্দু। এরপরই ভয়ঙ্কর অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা। বললেন, "বিধায়ক পদ বাঁচাতে অসুস্থ সাজিয়ে বাড়িতে বসিয়ে রাখা হচ্ছে মুকুল রায়কে।"
মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই দলত্যাগ আইন কার্যকরের দাবি তুলেছে বিজেপি। নথি তুলে ধরে অভিযোগ জানানো হয়েছে বিধানসভার স্পিকারের কাছে। চলছে সেই মামলার শুনানি। এই ইস্যুটি দ্রুত নিষ্পত্তির দাবিতে আইনি পথেরও দ্বারস্থ হয়েছে গেরুয়া বিধায়করা। স্পিকারের কাছে তিনবার শুনানি হলেও একবারও অংশ নেননি বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়। তাঁকে অসুস্থ বলে জানিয়েছেন স্পিকার।
যা নিয়ে এ দিন সরব হন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, "তৃণমূল আমলে গত ১০ বছরে ৫০ জন বিধায়ক দল বদল করেছেন। ওপেন ব্যালটে এক দলের নির্বাচিত বিধায়ক অন্য দলকে ভোট দিয়েছে। তারপরও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তৎকালীন বিরোধী দলের লড়াই জারি রেখে আইনি প্রক্রিয়াটির চূড়ান্ত পরিণতি দেখার সদিচ্ছার অভাব ছিল। কিন্তু আমরা বিজেপি গণতন্ত্র, সংবিধানের স্বার্থে এর পরিণতি দেখেই ছাড়ব। বছরের পর বছর শুনানি আরর হবে না। সুপ্রিম কোর্ট মণিপুরের একটি মামলায় বলেছিল তিন মাসের মধ্যে দলত্যাগীদের নিয়ে অধ্যক্ষকে রায় জানাতে হবে। আমরাও দেখেই ছাড়ব মুকুল রায়ের ক্ষেত্রে কী হয়।" এরপরই শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, "মুকুলবাবুকে অসুস্থ সাজিয়ে ঘরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। পিএসি-র একটি বৈঠকেও তিনি হাজির হচ্ছেন না। কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন তৃণমূলের প্রবীন বিধায়ক তাপস রায়। অর্থাৎ খরচ করব আমরা, তার হিসাবওরাখব আমরা। এটা হতে পারে না।"
সোম ও মঙ্গলবার দলত্যাগী দুই বিধায়কের বিরুদ্ধেও পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকরের আবেদন তোলা হবে বলে এ দিন সাফ জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, "ভোটের ফলাফলের পর দলের সঙ্গে সম্পর্কহীন দুই বিজেপি বিধায়ককে নন এমএলএ সিএম ও তাঁর কোম্পানি তৃণমূলে নিয়েছেন। এতে দলত্যাগ বিরোধী আইনকে অপমান করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। আপাতত চিঠি দিয়ে তাঁদের জবাব চাওয়া হয়েছে। পরে যথাযত পদক্ষেপ করা হবে।"
মুকুল রায় বিজেপি ত্যাগের পর থেকেই বাংলায় দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার দাবিতে সরব বিজেপি। দলীয় শৃঙ্খলাকেই বড় করে তুলে ধরতে চায় বঙ্গ বিজেপি নেতারা। এক্ষেত্রে বেসুরো বিধায়কদের বিরুদ্ধে পদ্ম শিবিরের হাতিয়ার দলত্যাগ বিরোধী আইন। কিন্তু তাতেও লাভ কী খুব একটা হচ্ছে? মুকুল রায়কে অনুপ্রেরণা করেই দল ছেড়েছেন আরও দুই বিধায়ক বিষ্ণুপুরের তন্ময় ঘোষ ও বাগদার বিশ্বজিৎ দাস। যারপরনাই ক্ষুব্ধ বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন