ভোটপরবর্তী বাংলায় গেরুয়া ঝড়ে যখন বাংলার বহু বিধায়কেরা ঘাসফুল ছেড়ে পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নিচ্ছেন এমত অবস্থায় আবারও সাক্ষাৎ মুকুল-সব্যসাচীর। এর আগে ভোটের মুখে ঘাসফুল শিবিরের নেতা তথা বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র সব্যসাচী দত্ত এবং বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের 'লুচি-আলুর দম'এর আলাপচারিতা নিয়ে বেজায় চটেছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সব্যসাচীর বিরুদ্ধে সেই সময়ে দল বদলের জল্পনাও ছড়ায় বঙ্গ রাজনীতিতে। কিন্তু সেসবে জল ঢেলে সব্যসাচীর বক্তব্য ছিল, তিনি তৃণমূলে ছিলেন, তৃণমূলেই আছেন। তবে এবারে আর লুচি আলুরদমে নয়, খিচুড়ি-বেগুনে কাছে এলেন মুকুল এবং তাঁর 'ছোটো ভাই' সব্যসাচী।
নিউটাউনে এক সামাজিক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে পুনরায় এক ফ্রেমে এলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও তৃণমূলের সব্যসাচী দত্ত। সেখানে একই সঙ্গে বসে খিচুড়ি-বেগুনির স্বাদ নেন তাঁরা। পাশাপাশি বসে গল্পে মেতে ওঠেন এই দুই হেভিওয়েট নেতা। মুকুল রায়কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তাঁর উত্তর, "যা রটে তা কিছু ঘটে। এবারে আপনারা সবটা বুঝে নিন"।
মুকুলের মুখে একথা শোনার পর থেকেই বিধাননগরের মেয়রের দল বদলের জল্পনার আগুনে ঘৃতাহুতি হয়েছে। বাংলায় বিজেপির উত্থানের পিছনে মুকুলের অবদান রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।। মুকুল রায়ের হাত ধরেই তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়ে নির্বাচনে লড়াই করার টিকিট পান অর্জুন সিং, অনুপম হাজরারা, নিশীথ প্রামাণিকরা। সম্প্রতি বাবার পথে হেঁটে পদ্ম শিবিরে নাম লেখান তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদ তথা মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু।
আরও পড়ুন বাংলায় বিজেপি জিতলে কি তিনিই মুখ্যমন্ত্রী, জানালেন দিলীপ
তবে দল বদলের এই জোয়ারের সময়ে খিচুড়ি-বেগুন ভাজায় তবে কি সেই ইঙ্গিতই ভেসে আসছে? তৃণমূলের বিশ্বস্ত সৈনিক সব্যসাচীর অবশ্য বক্তব্য, "এটি কোনও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নয়, গত বছর এই অনুষ্ঠানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও এসেছিলেন"। কিন্তু গতবারে তো মুকুল রায় আসেনি! সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে সব্যসাচীর জবাব, " অনুষ্ঠান বাড়িতে কে কে আসছে সেটা আগে থেকে জানা সম্ভব হয়। এখানে সবাই নিমন্ত্রিত।" অপরদিকে মুকুল জানালেন, "সব্যসাচীর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা রাজনীতির ঊর্ধ্বে। সব্যসাচী আমার ছোট ভাইয়ের মতো। ওর সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা আমার হয়নি। তবে হ্যাঁ , তৃণমূলের অনেক বিধায়ক-সাংসদরা আমার সঙ্গে রাজনৈতিক যোগাযোগ রাখছে।"
কিছু দিন আগেই সব্যসাচী দত্ত ও সুজিত বসুর দ্বন্দ্ব সকলের সামনে আসে। সাংবাদিকদের সামনে সুজিত বসুকে আক্রমণ করেন বিধাননগরের মেয়র। এর পাল্টা জবাবও দেন সুজিত বসু।
বেশ কিছু দিন ধরেই বিধাননগরের মেয়রের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। জল ঠিক কোন দিকে গড়াচ্ছে তা অবশ্য সময়ই বলবে।