নারদকাণ্ডে আইপিএস এসএমএইচ মির্জাকে সিবিআইয়ের গ্রেফতারের পর সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুললেন নারদ স্টিংকাণ্ডে অভিযুক্ত মুকুল রায়। বর্তমানে বিজেপি নেতা মুকুল এদিন বলেন, "অপরাধীর ক্ষেত্রে তদন্তকারী সংস্থা যেটা মনে করবে সেটাই হবে। এটা সম্পূর্ণ তাঁদের ব্যাপার।" তবে তৃণমূলের একদা ‘প্রধান সেনাপতি’ মুকুল রায় জানান, "যে সময় এই লেনদেন চলছিল, সেই সময় আমি নির্বাচনে দাঁড়াইনি। কোথাও দেখা যায়নি যে আমি টাকা নিচ্ছি বা দিচ্ছি"।
আরও পড়ুন- পাঁচ দিনের সিবিআই হেফাজতে আইপিএস অফিসার মির্জা
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে ম্যাথু স্যামুয়েলের করা নারদ স্টিং অপারেশনে হইচই পড়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। পরবর্তীকালে তদন্তের সময় ম্যাথু স্যামুয়েলের সঙ্গে সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গেই মূলত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল মুকুলকে, এমনটাই জানা গিয়েছে সূত্র মারফৎ। যদিও এদিন সে প্রসঙ্গে মুকুল রায় বলেন, "আমার সঙ্গে টাকা লেনদেনের ব্যাপারে কোনও কথা হয়নি। ব্যবসার ব্যাপারে পরামর্শ নিতে এসেছিল।" কিন্তু, তাহলে কেন বর্ধমানের প্রাক্তন পুলিশ সুপারের নাম বলেছিলেন তৎকালীন তৃণমূল নেতা মুকুল রায়? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে মুকুলের ঝটিতি জবাব, "ওরা বর্ধমানে ব্যবসা করতে চেয়েছিল। জমি কেনা বেচা সংক্রান্ত ব্যাপার, তাই এসএমএইচ মির্জার নাম বলেছিলাম।"
আরও পড়ুন- রাজীব কুমারের খোঁজে সিআইডি দফতরে ফের সিবিআই হানা
তবে সিবিআইয়ের এই গ্রেফতারি নিয়ে বিশেষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি মুকুল রায়। তাঁর কথায়, "সিবিআই কী করবে সেটা তাঁদের ব্যাপার। আমার মত সত্য উদঘাটিত হোক। অনেককেই দেখা গিয়েছে টাকা নিতে। শোভন চট্টোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং আরও অনেকে আছেন। যা প্রমাণ করার আদালতই করবে। আমি বলার কেউ নই। বহু লোক টাকা নেয়। তবে রসিদ আছে কি না তা দেখতে হবে।" অন্যদিকে, রাজীব কুমারের 'খোঁজের' মাঝেই মির্জার এই গ্রেফতারির মাধ্যমে কি নজর সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুকুল বলেন, "রাজীব কুমার আর এই তদন্ত দুটো আলাদা ব্যাপার। রাজীব কুমারকে খুঁজে পাওয়া যাছে না, এটা রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা।"
আরও পড়ুন- টালা ব্রিজে যান চলাচল কি সম্পূর্ণ বন্ধ হবে? সিদ্ধান্ত আগামীকাল
এদিকে, এসএমএইচ মির্জার গ্রেফতারি নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "এর আগে ম্যাথু স্যামুয়েলকেই বারবার অপরাধী প্রমাণ করার চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু এবার মানুষ সবটা জানতে চায়। সিবিআই সঠিক দিকেই যাত্রা শুরু করেছে। তদন্ত এগোতে থাকুক।" অন্যদিকে, সিপিআইএম-এর পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "আপনারা ভাবুন, একজন আইপিএস অফিসার দলের হয়ে টাকা তুলছে। তবে তাঁকে ধরতে কেন এতোদিন সময় লাগলো সেটাই প্রশ্ন! এই সবে শুরু, আরও ধরা পড়বে। আর রাজীব কুমার ক্রিমিনালদের মতো লুকিয়ে আছেন। কিন্তু কতদিন?"