বার্তা পেয়েছিলেন রবিবার। ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই সোমবার দলের সাংগঠনিক বৈঠকে সক্রিয় হয়েছেন মুকুল রায়। এখানেই শেষ নয়, স্পষ্ট ভাষায় বললেন, বঙ্গ বিজেপিতে মুকুল-দিলীপ দ্বন্দ্ব জল্পনা ভিত্তিহীন ও তাঁর সঙ্গে বাংলার বিজেপি সভাপতির কোনও বিরোধ নেই। গত রবিবার দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে আলোচনার পর মুকুল রায়ের এই মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
কী বলেছেন মুকুল রায়?
দলের সাংগঠনিক বৈঠকে সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছেন মুকুল রায়কে। তিনি বলেছেন, 'আমার সঙ্গে দিলীপ ঘোষের কোনও বিরোধ নেই। সব জল্পনাই একাংশের মানুষের মনগড়া ভাবনা। দলের মধ্যে কোনও ভেদ নেই। ভুল খবর ছড়িয়ে কিছু রাজনৈতিক দল বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। ২০২১ বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে বিজেপি ঐক্যবদ্ধভাবেই লড়াই করবে।'
বিজেপির অন্দরমহলে বেশ কয়েকদিন ধরেই কথা উঠছিল যে মুকুল রায় সহ এ রাজ্যে দলের একাংশ সক্রিয় ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে না। মুকুল-দিলীপ বিবাদই এর জন্য দায়ী। শেষ পর্যন্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। রবিবার একদিকে যখন দিল্লিতে জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠক করছেন দিলীপ ঘোষ, ঠিক তখনই সল্টলেকের বাড়িতে মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্যের দুই হেভিওয়েট নেতার বিবাদ মেটাতে উদ্যোগ নেয় ও দুই নেতাকেই দলের হয়ে বাংলায় সমান ও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার কথা বলেন।
গেরুয়া শিবিরের অন্দরের খবর, আগামী বছর বিধানসভা ভোটকে মাথায় রেখে মুকল রায় ও দিলীপ ঘোষকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিজেপির জাতীয় এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য মুকুল রায় বলেছেন, 'বিজেপি হল জাতীয় দল। এই সব দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সব সময় একযোগে লড়াই, আন্দোলনের কথা বলে থাকেন। এক্ষেত্রে কোনও বিরোধ বা ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ নেই।'
দিল্লিতে গত রবিবারও তাঁর সঙ্গে মুকুল রায়ের বিরোধ নস্যাৎ করে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন যে, 'তিনি (মুকুল রায়) বিজেপিতেই রয়েছেন এবং থাকবেন। আমাদের কিছু মত পার্থক্য থাকলে তা মিটিয়ে নিতে বলা হয়েছে ও একসঙ্গে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতারা।' তবে, এ লড়াই কী আদৌ মিটবে? সন্দিহান পদ্ম বাহিনীর নেতারাই।
এদিকে, রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র কৃশানু মিত্র সোমবারই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মত পার্থক্যের দরুন ২০১৭ সাল থেকেই পুরনো দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন তিনি। মোদী সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণের ব্যর্থতা ও মমতা সরকারের উন্নয়নমূলক কাজই তাঁকে জোড়া-ফুলে যোগ দিতে আকৃষ্ট করেছে বলে জানান কৃশানু। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে কামারহাটি থেকে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন তিনি।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন