পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ আগাম ঘোষণা করে দিলেন তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন। গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার আগে জেলা প্রশাসন ও খাদ্য দফতরের বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন সিরাজ খান। তিনি জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে দেখেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। মুসলিম বিরোধী বলে যাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তাঁরা শুধুই রাজনীতির কাদা ছোড়াছুড়ি করেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তিনি বলেন, "আমি একজন মৎস্যজীবী। মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ না দিয়ে আমাকে দিয়েছে খাদ্য দফতর। সেখানেও কোনও কাজ করতে পারছি না।সম্প্রতি সরকার প্রদেয় ছোলার ডালের পোকা ধরেছিলাম। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বা জেলাশাসককে জানিয়েও কোনও ফায়দা হয়নি। দুর্নীতি ধরলেও তা বন্ধ করতে পারছি না।"
আরও পড়ুন, “অনুব্রত মণ্ডল বড় খেলোয়াড়, আর আমিও মারামারি করতে চাই না”
জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পদ বা দলও ছাড়ছেন তিনি। আগামিকাল বুধবার বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেবেন বলে জানিয়েছেন সিরাজ খান। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বিজেপির এ রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীর সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হয়েছে।
তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা নিয়ে তোলপাড় পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক মহল। কর্মাধ্যক্ষ বলছেন তিনি শুভেন্দু অধিকারীকে দেখে রাজনীতিতে এসেছেন। এদিকে শুভেন্দু অধিকারীর অরাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে দল বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা তলে বহু দিন ধরেই কোনও কর্মসূচিতে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে দেখা যাচ্ছে না। এদিকে শুভেন্দুর সঙ্গেই দলের সাংসদ সৌগত রায়ের বৈঠক চলছে। এখনও পর্যন্ত কোনও রফাসূত্র মেলেনি বলেই জানা গিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের এক মুসলিম তৃণমূল নেতার বিজেপিতে যোগ দেওয়া খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই যোগদান আগাম রাজনৈতিক সংকেতের বার্তাও বহণ করতে পারে। আবার চাপের রাজনীতির বড় অস্ত্র হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আরও পড়ুন, হার্মাদমুক্ত দিবসে শুভেন্দুর স্মৃতিচারণা, বর্তমান রাজনীতি নিয়ে কোনও মন্তব্য নয়
তৃণমূল, সিপিএম ও কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি উগ্র হিন্দুত্ববাদী, মুসলিম বিরোধী ও সাম্প্রদায়িক। এঁরা এক যোগে লড়াই না করলেও এই তিন দলই এ রাজ্যে বিজেপিকে আটকাতে মরিয়া। সিরাজ বলেন, "মুসলিম সংখ্যালঘুদের জন্য এই সরকার কী করেছে? নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে ১০ বছর আগে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বলেছেন ১০ শতাংশ মুসলিমকে চাকরি দেব, দিয়েছেন? গুজরাট, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের মুসলিমরা সুবিধা পাচ্ছে। এসব রাজনৈতিক দলের কাদা ছোড়াছুড়ি ছাড়া কিছুই না। আমি একজন মুসলিম লোক আমাকে হিসেব দেখাক কী করেছে।" তাঁর প্রশ্ন, "সরকার কাজ করলে মুসলিমরা কেন বিরোধিতা করছে?"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন