জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর সিঙ্গুর থেকে এবার নবান্ন অভিযানের হুঁশিয়ারি বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর। এদিন সিঙ্গুরের ধর্না মঞ্চ থেকে রাজ্যকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শুভেন্দু বললেন, ''নবান্নর ১৪ তলাকে নড়াতে হবে। নবান্ন না নাড়ালে আমাদের অন্নদাতা কৃষকরা বাঁচবেন না। বিজেপি সভাপতিকে অনুরোধ, নবান্ন অভিযানের কর্মসূচি নিন।''
সিঙ্গুর থেকেই কৃষক স্বার্থে আওয়াজ তুলছে গেরুয়া শিবির। ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিঙ্গুরে ধর্নার আয়োজন বিজেপির। সিঙ্গুরে আজ তিন দিনব্যাপী এই ধর্না কর্মসূচির শুরুর দিনে হাজির রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা। এদিন সিঙ্গুরের রতনপুর থেকে মিছিল শুরু করে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা, অগ্নিমিত্রা পলদের নেতৃত্বে শুরু হয় মিছিল। প্রায় ২ কিলোমিটার ঘুরে সেই মিছিল পৌঁছয় টাটা কারখানার কাছে।
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ততক্ষণে পুরোদমে তৈরি মঞ্চ। কৃষকদের স্বার্থে পাঁচ দফা দাবিতে বিজেপির এই কর্মসূচি। সারের কালোবাজারির প্রতিবাদ, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফসলের ক্ষতিতে ক্ষতিপূরণ-সহ পাঁচ দফা দাবিতে এই কর্মসূচি। এদিন ধর্না মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে শুরু থেকেই বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। চাঁচাছোলা ভাষায় রাজ্য সরকারকে আক্রমণ শুরু করেন তিনি।
রাজ্যে ভুল নীতির জন্যই বাংলার কৃষকরা উপেক্ষিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতার। শাসকদলকে তুলোধনা করে তাঁর তোপ, ''কেন্দ্রের প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। রাজ্য সভাপতিকে অনুরোধ করছি, সিঙ্গুর থেকেই নবান্ন অভিযান করুন। নবান্নের ১৪ তলা নড়াতেই হবে। নবান্নের ১৪ তলা না নড়ালে আমাদের অন্নদাতা কৃষকরা বাঁচবেন না।'' ফসলের কালোবাজারি রুখতে রাজ্য সরকারের তৈরি টাস্ক ফোর্স নিয়েও এদিন তোপ দেগেছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, ''টাস্ক ফোর্সের মিটিংই হল না। তাই ইবিও ধরতে পারছে না। চারিদিকে কালোবাজারি।''
শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি এদিন কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে রাজ্যকে আক্রমণ শানিয়েছেন দিলীপ ঘোষও। তুলোধনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, ''সিঙ্গুরে সর্ষে পুঁতে দিয়ে গেলেন, এখন ভূত বেরোচ্ছে। আমরা ৬ মাস দেখলাম। এখানকার কৃষকরা হাহাকার করছেন। আপনি গেলেন গোয়ায়।''
আরও পড়ুন- প্রাক্তন সাংসদই হলেন বর্ধমানের পুরপ্রশাসক, জারি বিজ্ঞপ্তি
উল্লেখ্য, আজ থেকে শুরু করে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিঙ্গুরে বিজেপির এই ধর্না কর্মসূচি চলবে। তবে এই কর্মসূচি ঘিরে গত রবিবার থেকেই জটিলতা শুরু হয়। সেদিন বিজেপির স্থানীয় কর্মীরা ধর্না-মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু করতে গেলে তাঁদের পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় বলেও অভিযোগ। অবশেষে শর্তসাপেক্ষে বিজেপিকে সিঙ্গুরে ধর্নার অনুমতি দেয় পুলিশ। শর্ত হল, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ করে ধর্না-অবস্থান চলবে না। একইসঙ্গে বলা হয়েছে মঞ্চে ৫০ থেকে ৬০ জনের বেশি লোক থাকতে পারবে না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন