নৈহাটি বিস্ফোরণ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বাজি নাকি বিপুল বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে দুর্ঘটনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার ঘটনার পরই নৈহাটির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যান সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। জেহাদি কার্যকলাপ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। গোটা ঘটনার এনআইএ তদন্তের দাবি করেছেন বিজেপি সাংসদ।
ঠিক কী বলেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়?
গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখার পর রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'এত বড় বিস্ফোরণের পর মনে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ উড়ে যেতে পারত। বারুদের স্তুপের উপর রয়েছে এরাজ্য। জেহাদিরা এসে রাজ্যে বসবাস করছে, বিস্ফোরক, আরডিএক্স জড়ো করছে। তাদের কী পরিকল্পনা তা দেখা হোক। অথচ এখানে কারোর কোনও মাথাব্যথাই নেই।' গোটা ঘটনা পুলিশের একাংশের মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
গোটা দেশজুড়ে সিএএ বিতর্ক তুঙ্গে। বিস্ফোরণের সঙ্গে নয়া আইনকে এদিন জুড়ে দেন লকেট। বলেন, 'সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে সামনে রেখেই জেহাদিরা এইসব করছে। বাংলাকে উ়ড়িয়ে দেওয়া চেষ্টা হচ্ছে।'
বৃস্পতিবারের এই ঘটনার পরই ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের আশ্বাস দেনন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'নৈহাটিতে জলের মধ্যে বাজি নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছিল। কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রয়োজনীয় সাহায্য করব একটা কাজ করতে গিয়ে কারও ক্ষতি হয়ে থাকলে দেখব।' ক্ষতিপূরণের কথা বলে গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে সরব হন বিজেপি সাংসদ। তাঁর কথায়, 'মানুষের ক্ষতি হলেই টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এবার এটা বন্ধ হোক। মুখ্যমন্ত্রী এখানে (নৈহাটি) এসে দেখুন কি হয়েছে। জানি উনি আসবেন না। এখন প্রমাণ লোপাটের নামে রিপোর্ট তৈরির কাজ চলবে। বাজি কারখানাকে সামনে রেখে বোমা বানানোর কারখানা বরদাস্ত করা হবে না।' এদিনের ঘটনার ভয়াবহতার কথা বলতে গিয়ে খাগড়াগড়, পিংলার উদাহরণ টেনে আনেন লকেট।
আরও পড়ুন: নৈহাটিতে তীব্র বিস্ফোরণ, কাঁপল চুঁচুড়াও, ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের আশ্বাস মমতার
গতকাল তীব্র বিস্ফোরণে কাঁপে ওঠে নৈহাটি। বিস্ফোরণের তীব্রতায় কাঁপে গঙ্গার ওপাড়ে হুগলির চুঁচুড়াও। সেখানে বহু বাড়ির জানালার কাচ ভেঙেছে। বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি কয়েকটি বাড়ি। ক'দিন আগেই নৈহাটিতে একটি বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে চার জনের মৃত্যু হয়। এর পর সেখান থেকে পুলিশ প্রচুর বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করে বলে জানা যায়। যা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। জনবসতী এলাকায় কীভাবে বাজি নিষ্ক্রিয় করা হল, এ নিয়ে চরম ক্ষোভপ্রকাশ করেন স্থানীয়রা।