লোকসভা নির্বাচনে ২০১৪ সালের মোদী ঢেউয়ে ভর করে বিজেপির কাছে কংগ্রেস ভয়ংকরভাবে পরাজিত হয়। এই পরাজয়ের কারণগুলোর মধ্যে একটি হল মনমোহন সিং সরকারের যুগান্তকারী উদ্যোগগুলো যেমন আরটিআই, মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্প-র মতো পরিষেবা এবং প্রকল্পগুলো নিয়ে কংগ্র্সের প্রচারের ব্যর্থতা। আর, এর জেরে সেখানে বেশি গুরুত্ব পেয়ে যায় দুর্নীতি ইস্যুতে বিজেপির প্রচার।
মনমোহন সিং-এর উত্তরসূরি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ বিপরীত ভাবনার মানুষ বলে প্রমাণিত হয়েছেন। সেটা কর্ণাটক প্রচারে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল। সোমবারই শেষ হয়েছে এই প্রচার। প্রচারে মোদী সামনে থেকে বিজেপিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর 'ডাবল-ইঞ্জিন' সরকারের বার্তা, হনুমান ইস্যুকে তুলে ধরার মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন এই নির্বাচন যতটা বাসভরাজ বোম্মাইয়ের। ঠিক ততটাই তাঁরও।
ভোটপ্রচারের মধ্যেই এসেছে মোদীর মাসিক রেডিও অনুষ্ঠান, 'মন কি বাত'। যার শততম পর্বটি হয়ে উঠেছিল মোদী সরকারের গত ৯ বছরের কার্যাবলীর প্রচার। যেখানে মোদী সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজের ইমেজ বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। আর, এই মাসিক অনুষ্ঠান ঘিরে জনসাধারণের সঙ্গে বিজেপির ফোনে মেসেজ বার্তা বিনিময়। যা-ও প্রচারে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এই 'মন কি বাত' আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পটভূমি তৈরির কাজে লাগবে। ইতিমধ্যে লোকসভা নির্বাচন দোড়গোড়ায় শ্বাস ফেলছে। কর্ণাটকে বিজেপি আগামী বছরের বড় লড়াইয়ের জন্য ভোটারদের কাছে পৌঁছতে বিধানসভা ভোটপ্রচারকে ব্যবহার করেছে। কিছু বিস্তারক বা পূর্ণ-সময়ের কর্মীদের মতে, '২০২৪ সালের প্রচারের ৫০% কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।'
আরও পড়ুন- কর্ণাটকের নির্বাচনে হনুমান ইস্যুর কাঁধে চেপে বসেছে বিজেপি, লড়াইটা কি তবুও সহজ?
টুমকুর শহরে, নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিস্তারক জানিয়েছেন, তাঁদের কাজটাই গুরুত্বপূর্ণ, নাম নয়। তাঁদের কাজ কোন ইস্যুতে বিজেপি কী অবস্থান নিচ্ছে, তা ভোটারদের কাছে বিশদে ব্যাখ্যা করা। উদাহরণস্বরূপ, মোদী বিরোধী দলগুলোর প্রতিশ্রুতিগুলোকে 'ফ্রিবাদী সংস্কৃতিট' বলে দাগিয়ে দিয়ে উপেক্ষা করা। আর, বিজেপি সরকারের কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলোই যে কেন মানুষের জন্য, তা ব্যাখ্যা করা।