''দিদি-মোদী এক হয় না। এটা রাজনৈতিকভাবে আপনাদের জন্য বুমেরাং হবে।'' সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এভাবেই মোদী-দিদির আঁতাতের অভিযোগের জবাব দিলেন বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে। এতদিন মাঠে-ময়দানে অভিযোগ উঠছিল। এদিন বিধানসভায় এর উপরই কার্যত সওয়াল-জবাব পর্ব হয়ে গেল। সম্প্রতি কলকাতায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর রাজভবনের বৈঠকের পর মোদী-দিদির আঁতাত নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলেছিল বামফ্রণ্ট ও কংগ্রেস।
শুধু গত ১১ জানুয়ারির রাজভবনের বৈঠকের পর নয়, একাধিক ইস্যুতেও দিদি-মোদীর আঁতাত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। সারদা-নারদা মামলা যতবার 'থমকে গিয়েছে', রাজীব কুমারের গ্রেফতারি নিয়ে 'ঢিলেমি হয়েছে', তখনই এই অভিযোগ সামনে নিয়ে এসেছে কংগ্রেস ও বামফ্রণ্ট নেতৃত্ব। এমতাবস্থায় যেদিন প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় এসেছিলেন সেদিন সিএএ, এনআরসি, এনপিআর নিয়ে ধর্মতলা চত্বর অবরোধ করে অবস্থান-বিক্ষোভ চলছিল। সে সময়ই রাজভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনও আঁতাতের অভিযোগ নিয়ে রেরে করে ওঠে বাম-কংগ্রেস।
সোমবার বিধানসভায় সিএএ বিরোধী প্রস্তাবের আলোচনাতেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁতাতের প্রশ্ন তুলেছিলেন সিপিএম-এর পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। সুজন এদিন বলেন, "প্রধানমন্ত্রী এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেছেন।" এরপরই মুখ্যমন্ত্রী এই মন্তব্যের কড়া জবাব দেন।
আরও পড়ুন: ‘একটা ভুল করে ফেলেছিলাম, আপনারা করবেন না’, মমতার গলায় আত্মসমালোচনার সুর
এদিন সিএএ, এনপিআর, এনআরসি ইস্যুতে মমতা তুলোধোনা করেন বিজেপিকে। একসঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করার আহ্বান জানান বাম ও কংগ্রেসকে। কিন্তু সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্যের কড়া জবাব দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "দিদি আর মোদী এক হয় না। এটা মাথায় রাখবেন। এটা একদিন আপনাদের পলিটিক্যাল বুমেরাং হবে। এটা একটা প্রোটোকল। কেউ মুখ দেখাতে যায় না।"
১১জানুয়ারি নরেন্দ্র মোদী কলকাতায় এসেছিলেন, সেদিন রানি রাসমনি রোডে অবস্থান করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। উল্লেখ্য, মোদীর সঙ্গে বৈঠক করার পর সেই অবস্থানে হাজির হয়েছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী। তখন সিএএ বিরোধী অন্য় সংগঠনের বিক্ষোভকারীরা মমতাকে ঘিরে প্রবল বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। এদিন মমতা বামেদের উদ্দেশে বলেন, "সেদিন যা আচরণ করেছেন তা ঠিক হয়নি"।
এখানেই থামেননি মুখ্য়মন্ত্রী। বরং পাল্টা বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের বোঝাপড়ার অভিযোগ করেছেন মমতা। সিপিএমের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলেন, "আপনারা বিজেপিকে সমর্থন করেন। তাই ভোট ট্রান্সফার করতে পেরেছেন।" উল্লেখ্য় ২০১৯ লোকসভার নির্বাচনের পর সিপিএমের ভোটের হার অনেকটাই কমে যায়। বিজেপির ভোট শতাংশ যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। তৃণমূল কংগ্রেস তখনও অভিযোগ করেছিল সিপিএম ভোট ট্রান্সফার করেছে পদ্মশিবিরকে।