Advertisment

Narendra Modi: মেদিনীপুরের সভায় ৫ লক্ষ মানুষ! শহরে জায়গা কোথায়?

Modi in Bengal: স্বাধীনতার পর পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম শুধু কৃষকদের জন্য় সভা করছেন কোনও প্রধানমন্ত্রী। প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ নরেন্দ্র মোদীর মেদিনীপুরের সভায় প্রকৃত কৃষকদের ভিড় কতটা হবে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

সম্প্রতি পাঞ্জাবের মুক্তসরের কিসান কল্যাণ র‍্যালিতে স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মেদিনীপুরের জনসভায় দর্শক সংখ্যা নিয়ে তরজা বেঁধে গিয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্য়ে। প্রশ্ন উঠেছে আদৌ কি প্রকৃত কৃষকরা এই সভায় ভিড় জমাবেন? বিজেপির দাবি, প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ ওই সভাকে কেন্দ্র করে মেদিনীপুর শহরে হাজির হবেন। তৃণমূলের পাল্টা প্রশ্ন, মেদিনীপুর শহরে ৫ লক্ষ লোক ধরবে কোথায়? সেই জায়গাই তো নেই। এত লোক আসবেনই বা কোথা থেকে?

Advertisment

১৬ জুলাই মেদিনীপুর শহরে কৃষকদের কাছে থেকে সংবর্ধনা নিতে জনসভা করছেন প্রধানমন্ত্রী। মেদিনীপুর কলেজ মাঠে সভার মঞ্চ বাঁধার কাজ চলছে। স্বাভাবিকভাবেই এই সভা সফল করতে উঠে পড়ে লেগেছে বিজেপি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে গেরুয়া শিবির রাজ্যের অন্যান্য জেলার তুলনায় ভাল ফল করেছে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে। অভিজ্ঞ মহলের মতে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে আসন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি। তাই পুরুলিয়ায় অমিত শাহর সভার এক মাসের মধ্য়েই মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভা। শুধু তাই নয়, কৃষকদের উপলক্ষ্য করে কোনও প্রধানমন্ত্রীর জনসভা এই রাজ্য়ে প্রথম।

আরও পড়ুন: রাজ্যে আনাগোনা বাড়ছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের

মোদীর সভায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ ঘটিয়ে চমক দিতে চায় বিজেপি। ওই দিন মেদিনীপুর শহর অচল করে দিতে আগ্রহী তারা। রাজ্য় কিষাণ মোর্চার সভাপতি রামকৃষ্ণ পাল বলেন, "যে টার্গেট রয়েছে তাতে ওই মাঠে ধরবে না। কাজেই ওই দিন মেদিনীপুর শহর অচল হয়ে যাবে। আমাদের লক্ষ্য়, ৪ থেকে ৫ লক্ষ লোক ১৬ তারিখ মেদিনীপুরে হাজির হবেন। সভা ময়দানে থাকতে পারবেন ১ লক্ষ মানুষ। বাকিরা থাকবেন শহরের সর্বত্র।"

রামকৃষ্ণবাবুর দাবি, "অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর সভায় যেতে চাইছেন, কিন্তু সবাইকে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০ টি লোকসভা এলাকার লোক আসবেন। দুই মেদিনীপর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, আরামবাগ লোকসভা থেকেই মূলত কর্মী-সমর্থকরা আসবেন। মেদিনীপুর জেলা থেকেই তো প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ হবে।"

publive-image মেদিনীপুর শহর অচল হয়ে যাবে ১৬ জুলাই, বলছে বিজেপি। নিজস্ব চিত্র

বিজেপির বক্তব্য় শুনে মুচকি হাসছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের দাবি, "লক্ষ লক্ষ লোকের কথা বলছে বিজেপি। একেবারে ফ্লপ হবে প্রধানমন্ত্রীর সভা। এসব অবাস্তব কথাবার্তা বলে লাভ নেই।" তৃণমূলের মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, "মেদিনীপুরে পঞ্চায়েতে হাতে গোনা আসন পেয়েছে বিজেপি। এই জেলার লোক তো সভায় যাবে না। জোর করে ধরে ধরে অন্য় জেলা থেকে লোক আনবে। শুনেছি ঝাড়খন্ড, উড়িষ্যা থেকে লোক আনবে। প্রায় মাঝমাঠে মঞ্চ বাধা হচ্ছে। মাঠের পরিধি এতটাই ছোট করে দেওয়া হয়েছে যে ২০ হাজার লোক দাঁড়ালেও মনে হবে মাঠ ভরে গিয়েছে। মেদিনীপুরে ৫ লক্ষ লোক ধরার জায়গাই নেই।"

পুলিশের হিসেব অনুযায়ী, ওই মাঠে ৮০ থেকে ৯০ হাজার লোক ধরতে পারে। তবে সবটাই নির্ভর করে মাঠের কোথায় মঞ্চ বাঁধা হবে তার ওপর। অজিতবাবুর ব্য়াখ্য়া, "ওই সভার মাঠে মোট লোক ধরে ৬৫ হাজার। বিজেপি এই প্রথম জনসভা করছে ওই মাঠে। খুব পিছিয়ে মঞ্চ করলে ৭০ হাজার।"

publive-image রাজ্য়ে এই প্রথম শুধু কৃষকদের জন্য় জনসভা করবেন কোনও প্রধানমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র

দেশজুড়ে কৃষকদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে আপাতত তৎপর বিজেপি। কৃষক আত্মহত্য়ার সংখ্য়াও বেড়েছে এই সরকারের শাসনকালে। ফসলের সহায়ক মূল্য় বৃদ্ধি করলেও ক্ষোভ কমেছে কী না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন স্বয়ং মোদী। দুদিন আগে পাঞ্জাবের মুক্তসরে কৃষক কল্য়ান র‌্যালিতে হাজির ছিলেন মোদী। "জাতির আত্মা" এবং "অন্নদাতা" বলে সেখানে কৃষকদের বর্ণনা করেন মোদি। কংগ্রেস শুধু ভোট ব্য়াংক হিসাবে ব্য়বহার করে এসেছে কৃষকদের, তাও বলতে ছাড়েননি তিনি। অর্থাৎ আগামী লোকসভা নির্বাচনে কৃষক ভোটকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি শিবির। এর আগে আখ চাষীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের মতে, এ রাজ্য়েও যে কৃষকরাই নির্বাচন জয়ের চাবিকাঠি তা পঞ্চায়েত ভোটে টের পেয়েছে বিজেপি। এখানে রামনবমী, হনুমান জয়ন্তীতে ভোটে প্রভাব পড়ে না।

বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য়, কৃষকদের পাশে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার। ধান-সহ বিভিন্ন খরিফ ফসলের সহায়কমূল্য় বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্র। তাই প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানাতেই এই সভার আয়োজন। কিন্তু এই দাবি মানতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। অজিতবাবুর দাবি, "এতদিন ব্য়বসায়ীদের দল ছিল, হঠাৎ কৃষকদের দল হয়ে গেল? মুখে বলছে ফসলের সহায়ক মূল্য় বা্ড়ানো হয়েছে, কিন্তু পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়িয়ে কৃষকদের চাষের খরচ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বীজ, সারের দামও বাড়িয়েছে।"

tmc bjp PM Narendra Modi west bengal politics
Advertisment