কম ব্যবহৃত সরকারি সম্পত্তিকে কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগ টানার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। যা হল ৬ লক্ষ কোটি টাকার 'ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন'। সরকারি সম্পত্তি বিক্রি নয়, চার বছরের মেয়াদে কম ব্যবহার হওয়া সংস্থাগুলোকে বেসরকারি হাতে দিয়ে আর্থিক লাভ ঘরে তোলার চেষ্টাই সরকারি সম্পত্তির নগদীকরণর মূল উদ্দেশ্য বলে দাবি করেছে কেন্দ্র। যদিও এর বিরুদ্ধে সরব বিরোধী কংগ্রেস ও তৃণমূল। বিকল্প পদ্ধতিতে কেন্দ্রের এই আর্থিক লাভের চেষ্টা আদতে সরকারি সম্পত্তি বিক্রি বলে অভিযোগ তাদের।
তৃণমূলের তরফে 'ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন'-এর বিরুদ্ধে এ দিন মুখ খুলেছেন সাসংদ সুখেন্দুশেখর রায়। তাঁর অভিযোগ কেন্দ্রীয় এই সিদ্ধান্ত সংসদ বা সংদীয় কোনও কমিটিতে আলোচনা হয়নি। এই সিদ্ধান্ত নীতি আয়োগের দ্বারা গৃহীত যা সাংবিধানিক সংস্থা নয়। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারেও এনিয়ে কিছু বলা হয়নি। ফলে ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইনে মানুষের সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করা যাবে না। সুখেন্দুশেখর রায়ের কথায়, "আর্থিক সংস্কারের নামে বিজেপি সরকার আসলে বেসরকারি কতিপয় পুঁজিপতির হাতে দেশের সম্পত্তি তুলে দিচ্ছে। পিপিপি মডেলের বদলে সরকারি সম্পত্তি চুরতরে লিজ দেওয়া হচ্ছে। যা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।"
কেন্দ্রের ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইনের সমালোচনায় সরব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদিকা প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। অর্থ সংগ্রহের এই নীতিকে "আইনগত ও সংগঠিত লুঠ" বলে দাবি করেছেন কংগ্রেস। হাত শিবিরের নেতা জয়রাম রমেশের দাবি, ''কোটি কোটি মানুষের বহু বছরের পরিশ্রমে দেশের যে সম্পত্তি তৈরি হয়েছে তার মূল্য অপরিসীম। যা এই কেন্দ্র বিজেপির কয়েকজন 'বন্ধু' শিল্পপতির কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে।"
প্রিয়াঙ্কার গান্ধীর কথায়, "আত্মনির্ভরতার ভুয়ো আশ্বাস দিয়ে সরকারটাকেই বিজেপি কতিপয় শিল্পপতির অধীনস্ত করে দিয়েছে। কেন্দ্রের সব কাজ ও সম্পত্তি ওইসব শিল্পপতিদের জন্যই।" বিজেপির হাতে দেশের সম্পত্তি সুরক্ষিত নয় বলে দাবি করেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা।
২০২১-২২ সালের সাধারণ বাজেটে অর্থমন্ত্রী সীতারামন সরকারি সম্পত্তির নগদীকরণের ঘোষণা করেছিলেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, আয় বৃদ্ধির উপায় হিসেবে মনিটাইজেশন পাইপলাইনের ব্যবহার করা হবে। সোমবার তার সূচনা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে সড়ক, রেল, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, টেলিকম সহ একাধিক ক্ষেত্র। বেশ কয়েকটি রেল রুটও বেসরকারি সংস্থার হাতে দেওয়া হচ্ছে। তালিকা প্রস্তুত। বিনিয়োগের জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্দিষ্ট সময় পর বেসরকারি সংস্থা সরকারকে সম্পত্তি ফিরিয়ে দেবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন