শিবসেনার অন্দরের বিবাদ আরও চওড়া হল। মহারাষ্ট্রের গণ্ডি পেরিয়ে বিবাদ এবার সংসদে পৌঁছল। লোকসভায় দলের সংসদীয় নেতার কুর্সি ঘিরে জোর লড়াই উদ্ধব ও একনাথ গোষ্ঠীর মধ্যে। লোকসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, নিমকক্ষে মোট ১৯ জন সাংসদের মধ্যে ১২ জন সেনা সাংসদ অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে নেতা বদলের আর্জি জানিয়েছেন। চিফ হুইপ কে হবেন তাও বাতলে দিয়েছেন। পাল্টা অধ্যক্ষকে চিঠি লিখেছেন সংখ্যালঘু গোষ্ঠী উদ্ধব ঠাকরের প্রতিনিধিরাও।
লোকসভার ১২ সাংসদের আর্জি যে, রাহুল শেলওয়ালেকে সংসদীয় দলের নেতা বলে ঘোষণা করা হোক। ভাবনা গাওয়ালিকে রেখে দেওয়া হোক চিফ হুইপ পদে। লোকসভার সচিবালয় সূত্রে এমনটাই খবর। জানা গিয়েছে, এই ১২ জন সেনা সাংসদ একনাথ শিণ্ডের অনুগামী।
বসে নেই উদ্ধব ঠাকরেরাও। নিজেদের আসল শিবসেনার সাংসদ হিসাবে দাবি করেছেন এঁরা। লোকসভার অধ্যক্ষকে পাল্টা একটি চিঠিও দিয়েছেন লোকসভায় শিবসেনার দলনেতা বিনায়ক রাউত। সেখানে উল্লেখ, ভাবনা গাওয়ালিকে চিফ হুইপের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক, বদলে ওই পুদে বসানো হোক রচনা ভিচারেকে।
বিজেপি সূত্রে খবর, শিবসেনার মোট ১৪ সাংসদ একনাথ গোষ্ঠীর অনুগামী। এক সিনিয়ার বিজেপি নেতার কথায়, '১২ জন নয়, শিণ্ডে শিবিরে রয়েছেন মোট ১৪ জন শিবসেনা সাংসদ।'
এক মাস আগেই মহারাষ্ট্রে সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছিল। উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বে কংগ্রেস, এনসিপি-র সঙ্গে জোট গড়ে মহাবিকাশ আগাড়ি সরকার গড়ার সিদ্ধান্তকে 'অনৈতিক' বলে দাবি করেন একনাথ শিণ্ডে। বিদ্রোহ করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সেনার ৪০-র বেশি বিধায়ক। শুরুতে তারা সুরাট, পরে আসমে গিয়ে হোটেল-বন্দি ছিলেন। উদ্ধব ঠাকরে বারে বারে আলোচনার জন্য ডাক দিলেও তাতে সাড়া দেয়নি শিণ্ডে সহ 'বিদ্রোহী'রা। এই সময় একনাথ শিণ্ডেজের সমর্থন করেন বিজেপি। পরে, পদ্মের সঙ্গে জোট গড়ে শিবসেনার 'বিদ্রোহী' গোষ্ঠী। সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে ঠাকরে সরকার। সুপ্রিম কোর্ট এই পরিস্থিতিতে অনাস্থা ভোটের নির্দেশ দিয়। তবে তার আগেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন উদ্ধব ঠাকরে। ফলে কণ্টকমুক্ত হয় কুর্সি। একনাথ শিণ্ডের নেতৃত্বে বিজেপির সমর্থনে মহারাষ্ট্র্রে সরকার গড়ে ওঠে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্রর ফড়নবিশ হন উপমুখ্যমন্ত্রী।
এসবের মধ্যেই উদ্ধব ঠাকরে 'বিদ্রোহী' ১৬ বিধায়ককে সাসপেণ্ড করেছিলেন। যা সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। এই মামলার কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে বর্তামানে দিল্লিতে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে। আগেই নিজেদের প্রকৃত শিবসেনা বলে দাবি করে দলের রাশ হাতে নিয়ে মরিয়া শিণ্ডে বাহিনী। তবে, বালাসাহেব-পুত্র উদ্ধব ঠাকরের দাবি, দলের প্রতীক তির-ধনুক কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।