২০২৪ সালে মানুষের ভোটে অন্ধ্রপ্রদেশে ক্ষমতায় না ফিরলে সেটাই হবে সম্ভব তাঁর শেষ নির্বাচন। স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন দক্ষিণী রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা টিডিপি সুপ্রিমো চন্দ্রবাবু নাইডু। বুধবার কুরনুলে দলীয় এক সভায় চন্দ্রবাবু বলেছেন, 'যদি আমাকে বিধানসভায় যেতে হয়, যদি আমাকে রাজনীতিতে থাকতে হয় এবং অন্ধ্রপ্রদেশের সঙ্গে ন্যায়বিচার করতে হয়… তাহলে পরবর্তী নির্বাচনে আপনাদের আমাদের (টিড়িপি)বিজয় নিশ্চিত করতে হবে… না হলে ২০২৪ সালের ভোটই হবে আমার শেষ নির্বাচন।'
এরপরই চন্দ্রবাবু জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে জানতে চান, 'আপনারা কি আমাকে আশীর্বাদ করবেন? আপনারা কি আমাকে বিশ্বাস করেন?' জবাবে বিরাট চিৎকারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে টিডিপি কর্মীরা। একইসঙ্গে ওই সভায় ২০২৪ সালের বিধানসভা ভোটের কথা তুলে ধরেন তিনবারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। নিশানা করেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তথা ওয়াইএসআর কংগ্রেসের প্রধান জগনমোহন রেড্ডিকে।
অভিযোগ, এর আগে চন্দ্রবাবুর স্ত্রীকে বিধানসভায় চরম অপমানিত করেছিল শাসক দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস বিধায়করা। বিধানসভা কক্ষের মাটিতে বসে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। সেই ঘটনার পরই চন্দ্রবাবু শপথ করেছিলেন যে, না জেতা পর্যন্ত আর বিধানসভায় প্রবেশ করবেন না তিনি। বুধবাররে সভায় সেই কথাও স্মরণ করিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
বর্তমানে টিডিপির সাংগঠনিক দায়িত্বে রয়েছে চন্দ্রবাবুর ছেলে লোকেশ। ভরা সভায় হাজির ছিলেন বহু নয়া প্রজন্মের ভোটর। তাঁদের স্বপ্ন দেখাতে বর্ষীয়ান চন্দ্রবাবু বলেছেন, 'আমার লড়াই শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য, রাজ্যের ভবিষ্যতের জন্য। এটা বড় কথা নয়। আমি এটি আগেও করেছি, ভবিষ্যতেও করব। টিডিপি-র কাছে উন্নয়ের বিশেষ মডেল রয়েছে। '
অতীতে রাজ্যের শাসনের সঙ্গে বর্তমান অবস্থার তুলনামূলক বিচার করে ২০২৪ সালে ভোট দেওয়ার জন্য জনগণকে আর্জি জানিয়েছেন চন্দ্রবাবু।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বয়স এখন ৭২। শাসক শিবির তাঁর বয়স নিয়ে নানা কটূক্তি করে থাকে বলে অভিযোগ। বয়সের ভারে তিনি কাজ করতে অক্ষণ- এই অভিযোগ উড়িয়ে চন্দ্রবাবু নাইডু বলেছেন, 'শারীরিকভাবে আমি এখনও খুব ফিট কিছু লোক আমার বয়স নিয়ে উপহাস করছে। আমি এবং (প্রধানমন্ত্রী) নরেন্দ্র মোদী একই বয়সী। বাইডেনের বয়সও ৭৯ বছর।'
মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএসআর-এর বিকে খণ্ডন করে নাইডু বলেছেন, 'নির্বাচিত হলে সব খয়রতি স্কিমগুলিই থাকবে। আমি রাজ্যের উন্নয়ন করব এবং সম্পদ তৈরি করব। তাতে রাজস্ব বাড়বে এবং সেই সঙ্গে আমরা কল্যাণমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়ণ করব। আসলে, আমরা আরও ভাল করব তবে (মুখ্যমন্ত্রী) জগন মোহন রেড্ডির মতো করে নয়। আমরা এর জন্য ঋণ করব না।' নাইডর অভিযোগ, সরকার নির্বিচারে টাকা ঋণ করেছে এবং রাষ্ট্রকে ঋণের জালে ঠেলে দিচ্ছে।
পুরো বক্তৃতাতেই অত্যন্ত আবেগী ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একদিকে পুরনো কথা, আবেগ তাড়িত হয়ে জনগণের মনকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা যেমন করেছেন চন্দ্রবাবু তেমনই তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের সামনেও জিতকে কী করবে তাঁর সরকার তা জানাতে চেয়েছেন।