পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে খারাপ ফলের জের শুধু গান্ধী পরিবারের ওপর বর্তাবে কেন? এগুলো তো লোকসভা নির্বাচন নয়। যে কেন্দ্রীয়ভাবে দলের হাইকমান্ড খারাপ ফলের জন্য দায়ী থাকবে। এগুলো বিধানসভা নির্বাচন। সেই কথা মাথায় রেখে পাঁচ রাজ্য- পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুরের প্রদেশ সভাপতিদের পদত্যাগের নির্দেশ দিলেন কংগ্রেস চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধী।
এর আগে সম্প্রতি নির্বাচনে কংগ্রেস মুখ থুবড়ে পড়লেই হয় রাহুল নয়তো প্রিয়াঙ্কা বঢরাকে নিশানা করছিলেন দলের ছোট থেকে বড় বিভিন্নস্তরের বহু নেতাই। এটা যেন সাম্প্রতিক সময়ে একটা রীতি হয়ে উঠেছিল। এবার সেই রীতি বদলে দিতে চান কংগ্রেস সভানেত্রী। আর, সেই কারণেই তিনি বিভিন্ন রাজ্যের প্রধানদের ওপর যে ক্ষুব্ধ, সেকথা গোপন রাখেননি। এই ব্যাপারে দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা জানিয়েছেন, ওই পাঁচ রাজ্যে নতুন করে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি তৈরি হবে। দলকে শক্তিশালী করে তুলতে সংগঠন বিস্তারে নজর দিতে চায় হাইকমান্ড। আর, সেকথা মাথায় রেখেই পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুরের প্রদেশ সভাপতিদের পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বে আছেন অজয়কুমার লাল্লু, উত্তরাখণ্ডের দায়িত্বে গণেশ গোদিয়াল, পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোত সিং সিধু, গোয়ায় গিরীশ চোদানকার। আর মণিপুরের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নামেইরাকপাম লোকেন সিং। নির্বাচনী প্রচারে এই নেতারা যেমন বলেছেন, তেমন ভাবেই যাবতীয় প্রচার কর্মসূচি তৈরি করেছিল কংগ্রেস হাইকমান্ড।
শুধু তাই নয়। এই পাঁচ রাজ্যের প্রদেশ নেতাদের অনুরোধেই নির্বাচনী প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন গান্ধী পরিবারের দুই মুখ রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সাম্প্রতিক অতীতে রাহুল গান্ধী বেশ কয়েকটি নির্বাচনে দায়িত্ব থাকলেও হারের মুখ দেখতে হয়েছে কংগ্রেসকে। এনিয়ে কংগ্রেসের অভ্যন্তরেই ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু, প্রিয়াঙ্কা বঢরার ওপর কংগ্রেস সভানেত্রীর বিপুল ভরসা। প্রিয়াঙ্কার মুখাবয়ব তাঁর ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধীর মতো। সেকথা মাথায় রেখে তাঁকে ঠাকুমা ইন্দিরার আদলে ধীরে-সুস্থে গড়ে তুলতে চান কংগ্রেস সভানেত্রী। সেকথা মাথায় রেখেই মেয়ে প্রিয়াঙ্কার গায়ে পরাজিতর তকমা লাগুক, এটা সনিয়া গান্ধী চান না। আর, সেই কারণে এই পরাজয়ের দায় প্রদেশ সভাপতিদেরকেই নিতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। এমনটাই অবশ্য মত গান্ধী পরিবারের সমালোচকদের।
তবে, ব্যাখ্যা যাই হোক, দিন দুয়েক আগেই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের কারণ পর্যালোচনায় বৈঠক করেছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। বৈঠকে দলকে শক্তিশালী করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই মতোই এগোতে চান কংগ্রেস সভানেত্রী। ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচন। সেকথা মাথায় রেখে এখন থেকে সংগঠন বিস্তার করতে হবে। বিভিন্ন রাজ্যে দলের সংগঠন তলানিতে ঠেকেছে। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কংগ্রেস সভানেত্রীকে তেমনটাই জানিয়েছেন সদস্যরা। তার ঠিক দু'দিন পরই পাঁচ রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিদের পদত্যাগের নির্দেশ দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী।
Read story in English