কংগ্রেসই দেশের একমাত্র দল, যাদের দেশের প্রতিটি ব্লকে অন্তত একজন হলেও সদস্য আছে। ঐতিহ্যের বাবুয়ানা মেশানো এসব গল্প থেকে এবার হাত ঝেড়ে ফেলতে চায় কংগ্রেস। গত কয়েকটি নির্বাচন স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে, দলের সেই রাজনৈতিক জমিদারি আর নেই। এমনটাই মনে করছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। দল দেখেছে, উঠতি বাবুশ্রেণির মত, কয়েকবছর আগে গজিয়ে ওঠা তৃণমূল কংগ্রেস, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতিরাও এখন দিল্লির মসনদ দখলের স্বপ্ন বিভোর।
এমনকী, শতাব্দীপ্রাচীন সর্বভারতীয় দলের সংগঠনের হাল এতটাই বেহাল যে এই সেদিনের আম আদমি পার্টিও দেশজোড়া সংগঠনের গল্প শোনাচ্ছে। আচমকা হাতে অর্থ এসে ধনী হয়ে ওঠা ব্যক্তির মতোই আচরণ করছেন আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। যে রাজ্যেই যাচ্ছেন, বলছেন সেখানেই নাকি জিতবেন। কিন্তু, সেসব ছেলেমানুষি করার সময় কংগ্রেসের নেই বলেই দলের শীর্ষ নেতারা বিশ্বাস করেন। এআইসিসির শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, উদয়পুরের চিন্তন শিবির তিন দিন ধরে অনেকটা শিক্ষা দিয়ে গিয়েছে।
এবার সেই সব শিক্ষা রাজ্যে রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার সময় এসেছে। মোবাইলে মিসড কল মার্কা সংগঠন নয়। ডাকলেই দলের কাজে আসেন, এমন সক্রিয় কর্মীদের নিয়ে সংগঠন বাড়াতে প্রতিরাজ্যে এমন চিন্তন শিবিরের প্রয়োজন। এই ব্যাপারে এআইসিসির শীর্ষ নেতৃত্বের অধিকাংশই একমত। বুধবার এনিয়ে দলের দু'দিনব্যাপী বৈঠক শেষ হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক, রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসির প্রতিনিধিরা বৈঠকে ছিলেন। সেখানেই রাজ্যভিত্তিক চিন্তন শিবিরের পরিকল্পনা নিয়েছে এআইসিসি। হাইকমান্ডও মনে করছে, এতে একদিকে দলের সক্রিয় কর্মীদের উপস্থিতি স্পষ্ট হবে। দলের রাজ্যভিত্তিক সংগঠন আগের তুলনায় মজবুত হবে। পাশাপাশি, দলের রাজ্যভিত্তিক রণকৌশল তৈরির কাজও এগোবে। একইসঙ্গে উদয়পুর ঘোষণাপত্র পার্টি ক্লাসের মতোই দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে।
আরও পড়ুন- হার্দিকের পদত্যাগপত্রে একগুচ্ছ অভিযোগ, পাতিদার নেতার নিশানায় রাহুল গান্ধী
বুধবারের বৈঠকে উপস্থিত দলের শীর্ষ নেতাদের সকলেই একটা বিষয়ে একমত হয়েছেন। ভালো ফল করতে হবে ২০২৪-এর জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। বিজেপি যে হিন্দুত্ববাদী তাস খেলবে, তা ইতিমধ্যেই জ্ঞানবাপী থেকে মথুরার মতো কাণ্ডগুলো স্পষ্ট করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অবিজেপি হিন্দুদের কীভাবে কংগ্রেসমুখো করা যায়, তার পরিকল্পনা করতে চান দলের ওয়ার্কিং কমিটির নেতারা। এজন্য রাজ্যভিত্তিক ইস্যু তুলে ধরার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। রাজ্যভিত্তিক চিন্তন শিবিরের ফলে সেই কাজ সহজ হবে বলেই মনে করছেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা।
Read story in English