ধর্মনিরপেক্ষ ভারতেই মুসলিমদের প্রতি বিজেপির সরকার বিমাতার মত আচরণ করছে। বুধবার এই অভিযোগে সরব হলেন এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়াইসি। তাঁর অভিযোগ, 'বিজেপি নেতৃত্বাধীন উত্তরপ্রদেশ সরকার জনগণের অর্থ ব্যবহার করে কানওয়ারিয়াদের ওপর ফুলের পাপড়ি বর্ষণ করছে। আমরা চাই, সরকার সকলের সঙ্গে সমান আচরণ করুক। কারণ, তারা মুসলিমদের ওপর ফুল বর্ষণ করে নি। উলটে, আমাদের বাড়িগুলিকে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।'
পার্লামেন্ট চত্বরে হায়দরাবাদের এই সাংসদ সাংবাদিক বৈঠকে সব ভারতীয়দের সঙ্গে সমান আচরণের দাবি সরকারের কাছে জানান। তিনি বলেন, 'যদি আপনি এক সম্প্রদায়কে ভালোবাসেন, তবে কিছুতেই অন্য সম্প্রদায়কে ঘৃণা করতে পারেন না। যদি আপনার ধর্মবিশ্বাস থাকে, তবে অন্যদেরও ধর্মবিশ্বাস আছে।' কানওয়ার যাত্রা নিয়ে মঙ্গলবারই সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, কানওয়ার যাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা হরিদ্বারের কাছে গঙ্গার জল সংগ্রহ করছেন। তারপর সেই জল নিয়ে আশপাশের শিবমন্দিরে শিবলিঙ্গের মাথায় ঢালার জন্য দৌড়চ্ছেন।
আরও পড়ুন- বিরোধীদের কৌশল নির্ধারণের বৈঠক, যোগ দিল না আপ-তৃণমূল
সেই ব্যাপারে বলতে গিয়ে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) সংগঠনের প্রধান জানান, 'যদি একজন মুসলিম খোলা জায়গায় কিছুক্ষণের জন্য প্রার্থনা করেন, তবে তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়ে যায়। মুসলিমদের লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি ছুড়ছে। লকআপে ঢুকিয়ে পেটাচ্ছে। এনআইএ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ইউএপিএর ধারায় মামলা দিচ্ছে। মুসলিমদের গণপ্রহার করা হচ্ছে। তাঁদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই সব কিছুই করা হচ্ছে, কারণ তাঁরা মুসলিম জন্য। অথচ, চলতি মাসের গোড়ার দিকে উত্তরপ্রদেশের মীরাটে সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা কানওয়ারিয়াদের ওপর পুষ্পবৃষ্টি করেছেন।' দুই সম্প্রদায়ের সঙ্গে সরকারের এমন দু'চোখা নীতি কেন, সেই প্রশ্ন তোলেন ওয়াইসি।
ওয়াইসির এই সব অভিযোগের কারণ, হজরত মহম্মদকে নিয়ে নূপুর শর্মার মন্তব্যের প্রতিবাদে গোটা দেশে পথে নেমেছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন। তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় দোকানপাট জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। গাড়ি ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। বিভিন্ন মহল্লায় গিয়ে হামলা চালিয়েছিলেন। সেই বিক্ষোভ কড়া হাতে দমন করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। সিসিটিভিতে বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত করে তাঁদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন।
Read full story in English