কর্নাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জ্বলন্ত হয়ে ওঠা হিজাব ইস্যুতে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই ঘটনার প্রভাব দেশজুড়ে পড়েছে। তবে, এতদিন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে সেভাবে উচ্চবাচ্য করেনি। এবার দলের কেন্দ্রীয়স্তর তথা কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যদিও তিনি তাঁর এই বক্তব্যকে কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য বা বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য বলতে রাজি হননি। দাবি করেছেন, এটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত।
শাহ জানিয়েছেন, স্কুলে ড্রেসকোড থাকে। সব মতাবলম্বীদেরই সেই পোশাকবিধি মেনে চলা উচিত। পাশাপাশি, হিজাব ইস্যুতে কর্নাটকের মুসলিম পড়ুয়াদের গোঁ ধরে থাকাও যে তিনি পছন্দ করছেন না, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন শাহ। বলেছেন, বিষয়টি আপাতত কর্নাটক হাইকোর্টে বিচারাধীন। আদালত যা বলছে, সকলেরই সেটা মানা উচিত।
শাহ তাঁর এই মতামত এমন একটা সময়ে জানালেন, যখন কর্নাটক হাইকোর্ট পোশাকবিধি নিয়ে অন্তর্বর্তী অবস্থান স্পষ্ট করেছে। আদালত জানিয়েছে, যতদিন মামলা চলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় পোশাক পরে আসা যাবে না। এই পরিস্থিতিতে আদালত যেহেতু ধর্মীয় পোশাক কোনগুলো, তা স্থির করে দেয়নি, সেই যুক্তিতে অনেক পড়ুয়াই ইচ্ছেমতো পোশাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসছেন। যা দেখে, বিভিন্ন কলেজ ডেভলপমেন্ট কমিটি মামলা চলাকালীন সময়ে পোশাকবিধি চালুর ওপর জোর দিয়েছে।
শুধু হিজাব প্রসঙ্গই না। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন ইস্যুতেও মুখ খুলেছেন শাহ। বর্তমানে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন চলছে। সেই নির্বাচনে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছেন এই অন্যতম শীর্ষ বিজেপি নেতা। তবে, কট্টর হিন্দুত্ববাদের বদলে এবারের প্রচারে শাহকে দেখা গিয়েছে উন্নয়নের বিষয়ে বেশি জোর দিতে। এমনকী, কট্টর হিন্দুত্ববাদ না-উন্নয়ন, এই দুই প্রশ্ন এলে তিনি যে উন্নয়নের হয়েই সওয়াল করবেন, তা বোঝাতেও কসুর করেননি এই শীর্ষ বিজেপি নেতা। এই ব্যাপারে তিনি যে হিন্দুত্বের পোস্টার বয় যোগী আদিত্যনাথের থেকে ভিন্নমতই পোষণ করেন, তা-ই ধরা পড়েছে শাহর কথায়।
আরও পড়ুন- সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ, কেন দায়ের FIR?
যোগী আদিত্যনাথ এবারের উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনকে ৮০ এবং ২০ শতাংশের মধ্যে যুদ্ধ বলে দাবি করেছেন। এই প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, 'এই নির্বাচন মুসলিম, যাদব বা হিন্দুদের বলে আমার মনে হয় না। যোগীজি সম্ভবত শতাংশের কথা বলেছেন। তিনি হিন্দু-মুসলিম বোঝাতে চাননি। হ্যাঁ, মেরুকরণ হচ্ছে। দরিদ্র এবং কৃষকরা জোট বাঁধছেন। কিষাণ কল্যাণ নিধি যোজনা থেকে বহু কৃষক অর্থ পাচ্ছেন। আমি পরিষ্কার মেরুকরণ দেখতে পাচ্ছি। তাই বলে নির্বাচনের ধাঁচকে মেরুকরণ বলা যাবে না।' শাহর এই সব বক্তব্যেই প্রশ্ন তুলছে বিভিন্ন মহল, ঠিক কী হল শাহর? আচমকা কেন এড়াচ্ছেন হিন্দুত্বের লাইন?
Read story in English