কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সম্পর্কে মন্তব্য করে বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়লেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। উত্তরাখণ্ডে নির্বাচনী প্রচারে বিশ্বশর্মা টেনে এনেছিলেন ২০১৬ সালের প্রসঙ্গ। ওই বছর ভারত সীমান্ত পেরিয়ে 'সার্জিকাল স্ট্রাইক' চালিয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে বিজেপির প্রচারে হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ' জেনারেল বিপিন রাওয়াতের নেতৃত্বে পাকিস্তানে ওই সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারত। রাহুল গান্ধী সেই সার্জিকাল স্ট্রাইকের প্রমাণ চেয়েছিলেন। আমরা কি কখনও আপনার কাছে প্রমাণ চেয়েছি যে আপনি রাজীব গান্ধীর ছেলে নাকি অন্য কারও?'
হিমন্ত বিশ্বশর্মার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নিন্দায় সরব হন বিরোধীরা। এমনকী, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির প্রধান তথা তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও পর্যন্ত মুখ খোলেন। অবিলম্বে হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে বরখাস্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আবেদন করেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী।
রবিবার সেই সমালোচনার জবাবে সাফাই দিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'তাঁরা আমার মন্তব্যের অপব্যাখ্যা করছে। আমি বলতে চেয়েছিলাম, যখন কিছু নিশ্চিতভাবেই ঘটেছে, তখন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে নেই। বিশ্বের যে কোনও দেশে যখন সশস্ত্র বাহিনী অভিযান চালিয়ে ফেরে, তখন তাদের প্রশংসা করা হয়। কিন্তু, এদেশে বিরোধী কংগ্রেস দল প্রশ্ন তোলে।'
হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, 'আমি নির্দিষ্ট প্রশ্ন তুলেছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম যে কেন কংগ্রেস পার্টি সার্জিকাল স্ট্রাইক সেরে ফিরে আসা ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলছিল? কেন ভারতীয় সেনার প্রশংসা করছিল না? প্রশ্ন তুলেছিলাম, কেন জেনারেল রাওয়াতের জীবিতকালে কংগ্রেস পার্টি তাঁকে অপমান করল? কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্ব, এই সব প্রশ্ন থেকে পালাতে পারবেন না। দেশের কাছে তাঁদের এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। আসলে কংগ্রেস মূল প্রশ্ন থেকে পালাতে চাইছে। আর, সেই জন্য আমার মন্তব্যের অপব্যাখ্যা করছে।'
আরও পড়ুন- রাজ্যে করোনায় বাড়ল মৃত্যু, সামান্য হলেও বাড়ল মৃত্যুহার
তবে, এই সাফাই দিয়েও হিমন্ত বিশ্বশর্মা কংগ্রেসের তোপের হাত থেকে রেহাই পাননি। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, 'এটা অত্যন্ত শিশুসুলভ এবং নিন্দনীয় মন্তব্য। ক্ষমতার জন্য তিনি কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন। আর, এখন প্রধানমন্ত্রী এবং আরএসএসের ভাষায় কথা বলছেন। যে প্রধানমন্ত্রী এবং আরএসএস সবসময় চরিত্রহননের চেষ্টা করে থাকে। আমি তাঁর থেকে এমন মন্তব্য আশা করি না। একজন মুখ্যমন্ত্রীর কোথায়, কী বলতে হয়, জানা উচিত।'
অসমের কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ বলেন, 'শর্মার এই মন্তব্যই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে বিজেপি উত্তরাখণ্ডে হারছে। আর, সেই হতাশার জেরে তৈরি বেপরোয়া ভাব থেকেই হিমন্ত বিশ্বশর্মা এই মন্তব্য করেছেন। এটা অসমের সংস্কৃতি নয়। এটা খুন, সিন্ডিকেট রাজ এবং মাফিয়াদের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের ভাষা হতে পারে।'
Read story in English