হোলির ঠিক নয় দিন আগে পাঁচের মধ্যে চার রাজ্যেই বিধানসভা নির্বাচনে অকাল হোলি খেলল বিজেপি। বুঝিয়ে দিল, বর্তমানে দেশে তাদের বিকল্প নেই। আসমুদ্র হিমাচলজুড়ে গেরুয়া শিবিরে তাই এখন শুধুই প্রশান্তির ছাপ। কারণ, আগামী দিনেও ভারতে যে গেরুয়া বিপ্লব চলবে, বৃহস্পতিবারই তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। তার মধ্যে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির ঐতিহাসিক জয়ে গেরুয়া শিবিরের সংঘবদ্ধ চেহারা আর আদর্শগত সার্বভৌমত্বেই যেন সিলমোহর পড়ল। যার বার্তাটা একদম পরিষ্কার- দিনের শেষে রাজনীতি মানেই বিশ্বাসযোগ্যতার লড়াই আর এক্ষেত্রে দেশে এই মুহূর্তে বিজেপির বিকল্প নেই।
বিজেপি যে ধারার রাজনীতি করে, বিরোধীদের কাছে সত্যিই তার কোনও জবাব নেই। গত একদশকে মোদির ছায়ায় সেটাই যেন দেশজুড়ে বারবার স্পষ্ট হয়েছে। প্রথম বিষয় হল, নতুন ধারার রাজনীতির প্রতি দায়বদ্ধতা। এই ধারণা মহিলা এবং দলিত শ্রেণির মধ্যে বিজেপি ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে দিতে পেরেছে। শুধু তাই নয়। বিজেপি যে এখন আর শুধু গোবলয়ের দল নয়, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মণিপুরের ফলে ফের তা স্পষ্ট হয়েছে নতুন করে। পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার যেন বুঝিয়ে দিল যে জোট রাজনীতির ধারণা ইতিমধ্যেই অস্তাচলে গিয়েছে। ধাক্কা খেয়েছে জাতপাতের রাজনীতিও। যে জাতপাতের রাজনীতির তাস এবারের ভোটে খেলতে চেয়েছিল আপ এবং বিজেপি বাদে বাকি সব দলই। আর, তাতেই তারা মুখ থুবড়ে পড়েছে।
পাশাপাশি, পুরনো, দুর্নীতি, জরাগ্রস্ত মুখকেও এবারের নির্বাচনে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে জনতা। অখিলেশ যাদব তার মধ্যেই প্রচারে সাড়া ফেলেছেন। কিন্তু, অতীতের কলঙ্ক তাঁর পিছু ছাড়েনি। উত্তরপ্রদেশে অনেকেই মনে করেছেন, সমাজবাদী পার্টি ক্ষমতায় এলে ফের মাফিয়াদের বাড়বাড়ন্ত হবে। কংগ্রেসের ভূমিকা ছিল, ফরাসি বিপ্লবের পর ফের রাজতন্ত্রের ক্ষমতা উদ্ধারের চেষ্টার মতোই। প্রিয়াঙ্কা গান্ধি নিজে উত্তরপ্রদেশে বহু নির্বাচনী সভা করেছেন। কিন্তু, মানুষ ডবল ইঞ্জিন সরকারের উন্নয়নেই আস্থা রেখেছে। পঞ্জাবে আবার কংগ্রেস জাতপাতের রাজনীতি করারও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, কংগ্রেসের সংস্কৃতির মতো প্রায় সবটাই ছিল প্রচারসর্বস্বতা। তাই কোনওটাই কাজে লাগেনি।
আরও পড়ুন- আপের ঝাড়ুতে পঞ্জাবে বাকিরা সাফ, ২৪-এর লোকসভাই পাখির চোখ কেজরিওয়ালের
২০১৪ থেকেই বিজেপি এবং আপ, এই দুই দলের উত্থান জাতীয় রাজনীতিতে একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছে যে নতুন ভারত চায় উন্নয়ন। চায়, সেই উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা। তার মধ্যে পঞ্জাবে আপের জয়, বিরোধী হিসেবে তার ভূমিকা আরও পোক্ত করল। একইসঙ্গে বুঝিয়ে দিল, কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধী না-শুধরোলে নতুন বিরোধী দলের উত্থান হবে। পাশাপাশি, বিজেপি যেভাবে কৃষক আন্দোলন সামলাল, তা সত্যিই তারিফযোগ্য। দলের নীতি যাই হোক, পরিস্থিতির বিচার করে কৃষিবিল ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের ইউ টার্ন, বিজেপিকে এবারের নির্বাচনে বড় সাফল্য এনে দিল।
Read story in English