দীর্ঘ ২৬ বছর পর একঘণ্টার জন্য জেল থেকে প্যারোলে মুক্তি পেল পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিংয়ের হত্যাকারী বলবন্ত সিং রাজোয়ানা। আর, ওই একঘণ্টার মধ্যেই আসন্ন পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে দাগ কাটার চেষ্টা করল এই দুষ্কৃতী। উপস্থিত সাংবাদিকদের মাধ্যমে পঞ্জাববাসীর কাছে শিরোমণি অকালি দলকে জেতানোর আহ্বান জানাল। একইসঙ্গে কংগ্রেসকে হারানোর আহ্বানও জানাল বলবন্ত। বর্তমানে পাতিয়ালা জেলে বন্দি বলবন্ত সিং রাজোয়ানা।
১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গায় হাজারেরও ওপর শিখ যুবক প্রাণ হারিয়েছিলেন। তারই জেরে কংগ্রেসকে হারানোর আহ্বান জানিয়েছে বলবন্ত। তার বাবা যশবন্ত সিংয়ের প্রয়াণবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্যই প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিল বিয়ন্ত সিংয়ের এই হত্যাকারী। বাবা দীপ সিং গুরদোয়ারায় যশবন্ত সিংয়ের প্রয়াণবার্ষিকীর অনুষ্ঠান বা 'সঙ্গত'-এর আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বলবন্ত বলে, 'আমার হৃদয় অকালি, আমার দল অকালি, আমি অকালি, পৃথিবীতে অকালির সরকার থাকা উচিত।'
যশবন্ত সিংয়ের এই অনুষ্ঠানে অকাল তখত জাঠেদার হরপ্রীত সিং, শিরোমণি গুরদোয়ারা প্রবন্ধক কমিটি বা এসজিপিসির সভাপতি হরজিন্দর সিং ধামি অকাল তখতের প্রাক্তন জাঠেদার গুরবচন সিং উপস্থিত ছিলেন। পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিংয়ের হত্যাকারী বলবন্তের বাড়ি লুধিয়ানার রাজোয়ানা কালান গ্রামে। তার বাবা মালকিত সিংয়ের মৃত্যুর পর ১৯৯৩ সালে বলবন্তকে দত্তক নেন যশবন্ত সিং।
সোমবার ওই একঘণ্টার প্যারোলে মুক্ত থাকাকালীন বলবন্ত বলে, 'আমার বাবা যশবন্ত সিং অনেকের কাছেই আদর্শ ছিলেন। তিনি নিজেকে দেশের জন্য উত্সর্গ করেছিলেন। সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৬২, ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু, তখন এমন একটা ঘটনা ঘটেছিল, যা গোটা শিখ সমাজকে শিহরিত করে দিয়ে গিয়েছিল। ১৯৮৪ সালে আমাদের অকাল তখত সাহিব আক্রান্ত হয়েছিল। হাজারেরও বেশি শিখ যুবককে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছিল। রাজীব গান্ধী তাঁর রাজপ্রাসাদ থেকে বাইরে এসে বলেছিলেন, যখন কোনও বড় গাছের পতন হয়, পৃথিবীও কাঁপে। এই সব ঘটনা শিখ সম্প্রদায়ের মনে গভীর ক্ষত তৈরি করেছিল।'
১৯৯৫ সালের ৩১ আগস্ট আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণ হারান পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিং। সেই সম্পর্কেও সোমবার মুখ খুলেছে বলবন্ত। সে জানায়, আত্মঘাতী বিস্ফোরণকারী দিলাওয়ার সিং ঘটনায় 'শহিদ' হয়। আর, তারপরই ঘটনা পরম্পরায় ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তবে তার বোন কমলদীপ কউর সবসময় স্তম্ভের মত তার পাশে থেকেছে। কেন সে শিরোমণি অকালি দলকে জেতাতে বলছে, তার কারণও সাংবাদিকদের কাছে ব্যাখ্যা করেছে বিয়ন্ত সিংয়ের হত্যাকারী। তার দাবি, কংগ্রেস পরাজিত হলে তার বাবা যশবন্ত সিংয়ের আত্মা শান্তি পাবে। সেই কারণেই, সে কংগ্রেসকে হারানোর ডাক দিচ্ছে।
Read in English