লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসককে নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা। নয়া প্রশাসক প্রফুল প্যাটেলের একাধিক বিতর্ক সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক মহল সরগরম। গোমাংসে নিষেধাজ্ঞা, দুই সন্তানের অধিক অভিভাবকের পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়ানোর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এই দ্বীপপুঞ্জে অপরাধের হার একেবারে তলানিতে। সেখানে গুন্ডাদমন আইন প্রণয়ন নিয়ে আরও শোরগোল হচ্ছে।
এছাড়াও উন্নয়নের কাজে যে কোনও জমি অধিগ্রহণের ক্ষমতা রয়েছে প্রশাসনের। যে কারণে পার্শ্ববর্তী কেরালার সিপিএম-কংগ্রেস একযোগে প্রতিবাদ জানিয়েছে। সোমবারই কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, প্রশাসকের পদক্ষেপ লাক্ষাদ্বীপের সংস্কৃতি এবং মানুষের জীবনযাপনকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। বলেছেন, এই ধরনের আইন কখনও মানা যায় না। লাক্ষাদ্বীপের সঙ্গে কেরালার দীর্ঘদিনের আত্মীয়তা। কিন্তু সেটাকে ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই ধরনেক সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে দূরে থাকুন।
তিনি ছাড়াও বাম গণতান্ত্রিক জোট এবং কংগ্রেসের বহু সাংসদ সেই সঙ্গে লাক্ষাদ্বীপের একমাত্র সাংসদ মহম্মদ ফয়জল পিপি এই স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। কেন্দ্রের কাছে চিঠি লিখে প্যাটেলের অপসারণের দাবি তুলেছেন। এমনকী তাঁর সিদ্ধান্তগুলি বাতিল করার আওয়াজ উঠেছে। গত বছর ডিসেম্বরে দাদরা নগর হাভেলি ও দমন-দিউয়ের প্রশাসক প্যাটেলকে লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসক পদে বসান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর থেকেই একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছেন প্রফুল প্যাটেল।
সাংসদের দাবি, প্রশাসক জনপ্রতিধির সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে যাচ্ছেন। জমি অধিগ্রহণ নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন সাংসদ। বলেছেন, "মানুষের জমি কেড়ে নেওয়ার একটা চক্রান্ত চলছে। জাতীয় সড়কের ন্যায় বড় সড়ক নির্মাণের জন্য জমি কেড়ে নিতে চাইছে কেন্দ্র। কিন্তু লাক্ষাদ্বীপের মানুষের বিশাল সড়ক কেন প্রয়োজন? ব্যবসায়িক স্বার্থে কেন্দ্রকে খুশি করতে এইসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন প্রশাসক।"
এর পাল্টা প্যাটেলের দাবি, "গত ৭০ বছরে লাক্ষাদ্বীপে কোনও উন্নয়নই হয়নি। প্রশাসন সেই কাজটাই করতে চাইছে। দ্বীপের মানুষ নয়, কিছু ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করা মানুষ এই নীতিগুলির বিরোধিতা করছে। এটাতে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখছি না আমি। মালদ্বীপ থেকে খুব একটা দূরে নয় লাক্ষাদ্বীপ। কিন্তু মালদ্বীপ এখন বিশ্ব পর্যটনের কেন্দ্র। আর লাক্ষাদ্বীপে কোনও উন্নয়নই হয়নি। আমরা একে বিশ্ব পর্যটনের কেন্দ্র করতে চাইছি।"