রাজ্যে যতগুলো মঠ, মন্দির, ধর্মশালা আছে, সম্প্রতি তার সবকটির রেজিস্ট্রেশন করানোর কথা স্থির করেছে বিহার সরকার। বিহার হিন্দু ধর্মীয় ট্রাস্ট আইন ১৯৫০-এর অধীনে এই সব নথিবদ্ধকরণ বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যার প্রেক্ষিতে বিহারের আইনমন্ত্রী প্রমোদ কুমার জানিয়েছেন, দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে বিহার এই মঠ, মন্দিরের নথিবদ্ধকরণের কাজ করতে চলেছে। ধর্মস্থানকে সুরক্ষিত রাখতে সরকারের এই উদ্যোগ বলেই সরকার জানিয়েছে।
এতে মন্দির, মঠ বা ধর্মশালার সীমানা জানা থাকবে সরকারের। নতুন কবরস্থান তৈরি বা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে ধর্মস্থান নিয়ে গন্ডগোলের সম্ভাবনা কমবে। বিশেষ করে যেসব ধর্মস্থানে প্রচুর সংখ্যক ভক্ত হাজির হন, সেই সব ধর্মস্থানগুলোর সুরক্ষায় আলাদাভাবে নজরও দেওয়া যাবে বলেই সরকার জানিয়েছে। সরকারের নথি অনুযায়ী বর্তমানে বিহারে ২,৪৯৯টি নথিবদ্ধ মঠ ও মন্দির রয়েছে। যাদের অধীনে রয়েছে মোট ১৮,৪৫৬ একর জমি। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই সব মঠ ও মন্দিরের জমিতে সমীক্ষা চালানোর।
কোনও জমির কোনও খুঁত আছে কি না। জমিতে বেড়া দেওয়ার প্রয়োজন আছে কি না, সেই সবই খতিয়ে দেখা হবে সমীক্ষায়। ইতিমধ্যেই ২০৫টি মন্দিরের জমির সীমানায় বেড়া দেওয়া হয়েছে। আরও ৯৪টির বেড়া দেওয়ার কাজ চলছে। জোট শরিক বিজেপি হামেশাই নীতীশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
আরও পড়ুন- বিপদে দেশের নিরাপত্তা ও যুবশ্রেণির ভবিষ্যৎ, ফের অগ্নিপথের বিরুদ্ধে সরব রাহুল
নীতীশের হিন্দুত্বের প্রতি আবেগ কম থাকার অভিযোগ করে। তারই পালটা হিসেবে মঠ ও মন্দিরের জমিগুলো রক্ষণাবেক্ষণে এই নজরদারির ওপর জোর দিয়েছে বিহার সরকার। কারণ, অন্যান্য রাজ্যের মতই বিহারে ক্রমশ হিন্দুত্বের আবেগ বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। সম্প্রতি নীতীশ কুমারের সরকারের ওপর তোপ দেগে বিহার বিজেপি সভাপতি সঞ্জয় জয়সওয়াল বিহারে জঙ্গি হানার আশঙ্কা বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু, শরিকের এই সব চাপ তৈরির চেষ্টা নিজস্ব কায়দাতেই সামলাতে চান বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।
অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ নীতীশ তাঁর ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি বজায় রেখেই প্রশাসনিক কৌশলে পালটা চাপে রাখতে চান বিজেপিকে। আর, সেই জন্যই মঠ ও মন্দিরের নথিবদ্ধকরণ এবং জমির ওপর নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এমনটাই মনে করছেন বিহারের প্রধান শাসক পার্টি সংযুক্ত জনতা দলের (জেডিইউ) নেতারা।
Read full story in English