রাষ্ট্রব্যবস্থাকে হাতিয়ার করে হিন্দুত্ববাদের সংস্কৃতি বিস্তারে দেশের বাকি রাজ্যকে টেক্কা দিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাত। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশের সিলেবাসে জায়গা পেল ভগবত গীতা। শিক্ষামন্ত্রী জিতু বাঘানি গুজরাত বিধানসভায় একথা জানিয়েছেন। শিক্ষা বাজেট নিয়ে সেই সময় গুজরাত বিধানসভায় আলোচনা চলছিল। তখনই বাঘানি একথা জানান। ভগবত গীতার ওপর স্কুলগুলো প্রার্থনা, শ্লোক আবৃত্তি, অনুবাদ, নাটক, কুইজ, অঙ্কন এবং আবৃত্তি প্রতিযোগিতারও আয়োজন করতে পারবে বলেই বাঘানি জানিয়েছেন।
এতদিন গীতার মূল্যবোধ এবং নীতি নিয়ে আলোচনা মন্দির চত্বরেই হত। সেখান থেকে তা স্কুল চত্বরে প্রবেশ করানোর মত এতবড় সিদ্ধান্ত নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি মেনেই হয়েছে। এমনটাই দাবি করেছে গুজরাত সরকার। কেন্দ্রের মোদী সরকার অতীত এবং বর্তমান সংস্কৃতি, প্রথার মধ্যে যোগসূত্র গড়ে তোলার পক্ষপাতী। ভারতের বৈচিত্র্যময় এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতির কথা যাতে দেশবাসী জানতে পারে, সেটাই চায় মোদী সরকার। দেশের অতীত গৌরব এবং সংস্কৃতির প্রতি দেশবাসীকে শ্রদ্ধাশীল করানোর জন্য শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছে কেন্দ্র। তৈরি হয়েছে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি। তার সুবাদেই গুজরাতের স্কুলশিক্ষায় গীতার প্রবেশ বলে দাবি করেছেন জিতু বাঘানি।
পরে সাংবাদিকদের বাঘানি জানান, দেশের সব ধর্ম এবং মতের মানুষ অতীতের হিন্দু সংস্কৃতির নীতি এবং আদর্শকে মেনে নিয়েছে। গীতার শ্লোকের গুরুত্ব শুধু ভারতই না। বিশ্বের বহু দেশই এখন উপলব্ধি করতে পেরেছে। সেকথা মাথায় রেখে গুজরাতের শিক্ষানীতিতেও তাঁরা জোর দিতে চান। পরম্পরা এবং বর্তমানের সামঞ্জস্য বিধানই গুজরাত সরকারের লক্ষ্য। সেকথা মাথায় রেখেই নতুন করে সাজানো হচ্ছে গুজরাতের শিক্ষাব্যবস্থা। বাঘানি বলেন, 'স্কুলে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে সর্বাঙ্গী শিক্ষা বা ধর্মীয় শিক্ষা নামে গীতা পাঠ্যবইয়ে থাকবে। আর নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রথম ভাষার পাঠ্যবইয়ে গীতা ঢুকবে গল্প বা গদ্যের আকারে।'
আরও পড়ুন- বলিউডের ‘নায়ক’ সিনেমার কায়দায় দুর্নীতি দমনে হেল্পলাইন পঞ্জাবের ভগবন্ত মানের
দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো অভিযোগ করে আসছে, স্কুলশিক্ষায় গৈরিকীকরণের চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি এবং সংঘ পরিবার। ধর্মীয় মেরুকরণ এবং কেন্দ্র-সহ বিভিন্ন রাজ্যের শিক্ষায় হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটানো হচ্ছে। গুজরাতের স্কুলশিক্ষার সিলেবাসে গীতার অন্তর্ভুক্তি সেই অভিযোগেই কার্যত সিলমোহর দিল বলেই বিরোধীদের অভিযোগ।
Read story in English