বিরোধীদের তুমুল আপত্তি এবং হই-হট্টগোলের মধ্যে মঙ্গলবার বিহার বিধানসভায় পাশ হল বিশেষ সশস্ত্র পুলিশ বিল। এই বিলকে কালা কানুন তকমা দিয়ে এদিন ব্যাপক বিরোধিতা করে বিরোধী জোট আরজেডি-কং-বামেরা। বিধানসভায় বিরোধী বিধায়করা বিক্ষোভ দেখান। একটা সময় স্পিকারকে কক্ষে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে। পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধ বাধে বিধায়কদের।
বিহার বিধানসভায় বেনজির ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিরোধ দলনেতা তেজস্বী যাদব ও তাঁর দাদা তেজপ্রতাপ যাদব-সহ ৫০ জন আরজেডি বিধায়ক এদিন পাটনার ব্যস্ত ডাকবাংলো মোড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পুলিশ জলকামান দিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। পরে বিরোধীদের গ্রেফতার করা হয়। বিধানসভার ভিতরে বিক্ষোভরত বিধায়কদের মারতে মারতে বাইরে নিয়ে আসার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। মারধরের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। এক আরজেডি বিধায়ককে তো অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে পাঠাতে হয়।
কেন এই বিলের বিরোধিতা করছে বিরোধীরা? এই বিলের মাধ্যমে বর্তমান মিলিটারি পুলিশকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হবে। তাদের সশস্ত্র বাহিনীতে পরিণত করা হবে। কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর মতো তারা কাজ করবে। রাজ্যের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত করার জন্য এই বাহিনীকে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ বাহিনী হিসাবে কাজে লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নীতীশ কুমার।
সরকারের এক শীর্ষ আধিকারিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, নেপাল ও তিন রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, বাংলা ও ঝাড়খণ্ড দ্বারা পরিবেষ্টিত বিহার। রাজ্যে বেশ কিছু মাও অধ্যুষিত অঞ্চল রয়েছে। সেই কারণে এই বিশেষ বাহিনীর প্রয়োজন পড়েছে। সিআইএসএফ-এর মতো অনেকদিন ধরেই এই বিশেষ বাহিনীর প্রয়োজন ছিল। তবে বিরোধীদের দাবি, বিলের ৭ নম্বর সেকশন অনুযায়ী, বিশেষ ক্ষমতা বলে এই বাহিনী যে কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার, বাড়িতে তল্লাশি চালাতে পারে বিনা পরোয়ানায়। নিয়ম অনুযায়ী, জেলা পুলিশেরই সেই ক্ষমতা রয়েছে।
তেজস্বী যাদব টুইট করে বলেছেন, "বিধানসভার কক্ষে বিধায়কদের মারধর করা হয়েছে। বেকার যুবকদের রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়েছে। নিম্নমানের দলের নিম্নমানের নেতা হয়ে নীতীশ কুমার এখন মানসিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন।" তিনি মারধরের ছবিও টুইট করেছেন। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও এই মারধরের তীব্র নিন্দা করেছেন।