বিহারে বিজেপির সঙ্গ ছাড়ল জেডি(ইউ)। মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন নীতীশ কুমার। রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে ইস্তফাপত্র দেন নীতীশ। কেন এই পদক্ষেপ? সদ্য পদত্যাগী সদস্য পদত্যাগী মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'বিজেপির সঙ্গে কাজ করা মুশকিল হচ্ছিল। বিধায়ক, সাংসদরা এনডিএ ছাড়তে বলেছিল। তাই পদত্যাগ করলাম।' এরপরই লালুপ্রসাদ যাদবের বাড়ি গিয়ে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব ও বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়িদেবীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। বৈঠকে তেজস্বী ও রাবড়িদেবীকে নীতীশ বলেছেন, 'আসুন ২০১৭ সালে যা ঘটেছিল তা ভুলে যাই এবং একটি নতুন অধ্যায় শুরু করি।'
লালু যাদবের বাড়ি থেকেই তেজস্বীকে সঙ্গী করে রাজভবনে যান নীতীশ কুমার। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক। একত্রে তাঁরা সরকার গড়ার দাবি পেশ করেন। ১৬৫ জন বিধায়কের সমর্থনপত্র জমা করেছেন তাঁরা। নীতীশ মহাগটবন্ধনে প্রত্যাবর্তনের পর রাজভবনের সঙ্গে কথা বলে ঠিক হয় বুধবার দুপুর ২টোয় নতুন মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করবে। সাতদলীয় মহাগঠবন্ধনের নেতা নির্বাচিত হয়েছেন নীতীশ। তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন। উপমুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন তেজস্বী যাদব।
জিতেনরাম মাজির হাম দলের চার বিধায়কও নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে জেডি(ইউ), আরজেডি জোটকে সমর্থন করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় সবচেয়ে বেশি বিধায়ক রয়েছে আরজেডির। তাদের বিধায়ক সংখ্যা ৭৯। বিজেপির ৭৭ এবং জেডি(ইউ) এর ৪৫ জন। বামেদের দখলে ১৬ বিধায়ক। এছাড়া নির্দল ও অন্যান্য বিধায়ক রয়েছেন ৭ জন। ম্যাজিক ফিগার ১২২।
মহারাষ্ট্রের বদলা বিহার? বিহারে ক্ষমতাসীন জেডি(ইউ)-বিজেপি জোটের মধ্যে প্রবল অশান্তির চলছিলই। তারমধ্যেই গত রবিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেননি নীতীশ কুমার। উলটে তাঁর সঙ্গে ফোনালাপ হয় কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর। ফলে জল্পনা ছিল যে, পদ্ম সঙ্গ ত্যাগ করবেন নীতীশ কুমার। সেই চর্চায় শেষ পর্যন্ত সিলমোহর পড়ল।
ইস্তফার আগে, মঙ্গলবার সকালে দলের বিধায়ক সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন নীতীশ কুমার। তারপরই হিন্দিতে একটি টুইটে, জেডি(ইউ) সংসদীয় বোর্ডের সভাপতি উপেন্দ্র কুশওয়াহা নতুন সরকারের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। নীতীশ কুমারকে উদ্দেশ্য করে টুইটে কুশওয়াহা "নতুন জোটের নেতৃত্ব"-কে অভিনন্দন জানান।
২০১৭ সালে আরজেডি-কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়েই ক্ষমতায় এসেছিল মহাজোট। পরে নীতীশ কুমার বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে বিহারের সরকার গঠন করেন। ২০২০-তে সরাসরি পদ্মের সঙ্গে জোটেই নির্বাচন লড়েছিল জেডিইউ। কিন্তু তাতেও ফাটল নজরে আসে। বছর দু'য়েকের মধ্যেই বিজেপির সঙ্গে ঝামেলায় জড়ায় জেডিইউ। ফলে ফের আরজেডি-কংগ্রেসের সঙ্গেই হাত ধরাধরি করে বিহারে সরকার গড়ার পথে নীতীশ কুমার।
আরও পড়ুন- নীতীশ বনাম বিজেপির কুর্সির লড়াই, বিহার বিধানসভায় কোন দলের বিধায়ক সংখ্যা কত
লালু-পুত্র তথা আরজেডি সুপ্রিমো তেজস্বী যাদব আড়ালে আগেই নীতীশকে সমর্থনের কথা জানিয়েছিলেন। কংগ্রেসও জানিয়েছে যে, তারা বিজেপি বিরোধী, ধর্মনিরপেক্ষ যে কোনও জোটকে সমর্থন করতে প্রস্তুত। বামেরা বাইরে থেকে মহাজোটকে সমর্থন করবে। স্পিকার পদ পাবে আরজেডি। কংগ্রেস থেকে মন্ত্রিত্ব পেতে পারেন ৪ জন।